ছাতির বদলে হাতি রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর ।।দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা

 পড়াশোনা দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা সহায়ক গ্রন্থ- আমার বাংলা থেকে রচনাধর্মী প্রশ্ন আসে  দুটি। দুটি প্রশ্নের মধ্যে উত্তর দিতে হয় একটি প্রশ্নের। যাতে তোমাদের পরীক্ষায় কমন পড়ে তার জন্য সম্ভাব্য প্রশ্ন-উত্তরগুলি নিয়মিত প্রকাশ করে চলেছি আমরা। আজকে আলোচনা করা হল ছাতির বদলে হাতি গ্রন্থের দুটি প্রশ্ন। 


বোর্ড ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে নির্দিষ্ট তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে।  প্রতিটি সেন্টারে একটি আইসোলেশন রুমের ব্যবস্থা থাকবে। সন্দেহজনক শিক্ষার্থীদের রুমে বসানোর ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও করোণা বিধি মেনেই পরীক্ষা নেওয় হবে। সুতরাং আমাদের হাতে সময় খুব কম ,এই অল্প সময়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের www.parasuna.com ওয়েবসাইট ভিজিট করবে। এছাড়াও পরীক্ষা সংক্রান্ত আপডেট পাওয়ার জন্য ক্লিক করতে পারো পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটে



"চেংমানের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল"- চেয়ারম্যান কে? তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার কারণ লেখো ।


অথবা

" তাতে চেংমানের চোখ কপালে উঠলো"- চেংমান কে? তার চোখ কপালে ওঠার কারণ কী ?


                                                              উত্তর 

চেংমানের পরিচয়ঃ- সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের "ছাতির বদলে হাতি" প্রবন্ধের এক উল্লেখযোগ্য চরিত্র হলো গারো চাষী চেংমান। এই দরিদ্র আদিবাসীটি মনমোহন মহাজনের কৌশল বুঝতে না পেরে প্রায় 36 বিঘে জমি হারিয়েছিল।


চেংমানের বিপদঃ- হালুয়াঘাট বন্দরে মনমোহন বন্ধকী- তেজরতির ব্যবসায়ী হিসেবে বিখ্যাত ছিলেন। এ মহাজনের ইঁদুর কলে পরে সর্বস্বান্ত হয়েছিল সরল গারো চাষী চেংমান।  প্রায় 25 থেকে 30 বছর আগে হালুয়াঘাট বন্দরে সওদা করতে এসেছিল চেংমান। কিছুক্ষণ পরে মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হয়। বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আশ্রয় নেয় মহাজন মনমোহনের দোকানের বারান্দায়। কুটবুদ্ধিসম্পন্ন মহাজন সুকৌশলে কলকাতা থেকে আনা নতুন ছাতাটি মেলে ধরে চেংমানের মাথার উপরে। মহাজনের এরূপ আচরণে স্থম্ভিত হয়ে যায় চেংমান। মহাজন তার মনের অবস্থা বুঝে বলেন- "নগদ পয়সা নাই বা দিলে, যখন তোমার সুবিধে হবে দিয়ে গেলেই হল। ওর জন্য কিছু ভেবোনা।" সরল গারো চাষী মহাজনের  কৌশল বুঝতে না পেরে নতুন ছাতা মাথায় দিয়ে মহা ফুর্তিতে বাড়ি চলে যায়।


মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার কারণ:- প্রত্যেক দিনে চেংমান হালুয়াঘাট বন্দরে সওদা  করতে এসে ধারের ছাতির দাম মিটিয়ে দিতে চায়। কিন্তু কূটনীতিবিদ মনমোহন মহাজন চেংমানের কথায় কান না তুলে এড়িয়ে যান। মহাজন সুযোগ বুঝে চেংমানকে আশ্বস্ত করে বলেন, সময় মতো দাম মিটিয়ে দেওয়ার। এভাবে দেখতে দেখতে এক বছর কেটে যায় মাথা থেকে ছাতির দামের কথা মুছে যায়। কয়েক বছর পর হঠাৎ একদিন ধরে ফেলে মহাজন বলেন- "কি বাছাধন, বড় পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছো, পাওনা মিটিয়ে দিয়ে যাও"- একথা শুনে চেংমানের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। মহাজন হিসাব কষে দেখলেন ছাতির দাম চক্রবৃদ্ধি সুদের হারে হয়েছে হাজার টাকা। যা প্রায় হাতির দামের সমান। যা দেখে চেংমানের চোখ কপালে ওঠে।


"আর এক রকমের প্রথা আছে -নানকার প্রথা"- নানকার প্রজাদের অবস্থা কেমন ছিল? পরে তাদের অবস্থার কী পরিবর্তন হয়েছিল?


অথবা 

'ছাতির বদলে হাতি '-পাঠ্যাংশ অবলম্বনে জমিদার'দের অত্যাচারের বর্ণনা যা আছে তা সংক্ষেপে লেখো ।


                                                উত্তর 


নানকার প্রথা- সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের 'ছাতির বদলে হাতি' প্রবন্ধে গারো পাহাড়ের অধিবাসীদের ওপর মহাজনী অত্যাচার ছাড়াও জমিদারের নানকার প্রথার জুলুমের খন্ডচিত্র  অঙ্কন করা হয়েছে। নানকার প্রথার দ্বারা জমিদাররা অকথ্য অত্যাচার চালাত। জমিদারদের এই প্রথায় আবদ্ধ প্রজাদের অবস্থা সাধারণ প্রজাদের চেয়েও দুর্বিষহ ছিল। এই  প্রজাদের কোনো জমির মালিকানা ছিল না। এমনকি আম-কাঁঠালের অধিকারটুকুও তারা পেত না।  জমি জরিপের পর আড়াই টাকা পর্যন্ত খাজনা দিতে হতো প্রজাদের। মহাজন তাদের থেকে একমনে দুই মণ ধান আদায় করতো। জমিদার ও মহাজনদের অত্যাচারের ভিন্ন ভিন্ন প্রথার  মধ্যে কঠোর প্রথা ছিল নানকার প্রথা। প্রজারা জমিদার'দের খাজনা দিতে না পারলে তহশিলদার তাদের কাছারিতে ধরে আনতো। তাদের পিছমোরা  করে বেঁধে মালঘরে আটকে রাখত। তারপর নিলামে তাদের সম্পত্তি বিক্রি করে খাজনা আদায় করতো পাওনাদারেরা।  এছাড়াও চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ নিয়ে চাষীদের সম্পত্তি কেড়ে নিতো।এরূপ অত্যাচারের খন্ড চিত্র লক্ষ করা যায় আলোচ্য প্রবন্ধে।


পরবর্তী অবস্থা- এভাবে অত্যাচার সহ্য করার  অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল প্রজাদের । কিন্তু গারো পাহাড়ের নীচে গড়ে ওঠা লাল নিশান তাদের অধিকারের লড়াই শিখিয়েছিল। তাই নওয়াপাড়া, দুমনাপাড়া , ঘোষপাড়া এবং ভুবনকুড়ার চাষিরা বিদ্রোহে জেগে ওঠে। তাদের জেদের কাছে পরাজয় শিকার করে পুলিশ ও কাছাড়ির জমিদার। এভাবে সাম্যবাদী ভাবনায় উদ্দীপ্ত হয়ে কমিউনিস্ট আদর্শে মানবতার মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে প্রজারা নানকার প্রথা বন্ধ করেছিল। ভালো হাল -বলদ এর অভাবে প্রজারা হতাশ না হয়ে মিলিতভবে জমি চাষ করতে শুরু করল। পাথুরে রুক্ষ ও শক্ত মাটিতে চাষ করা কষ্টকর হলেও স্বাধীনতার আনন্দের কাছে তা সামান্য। ধীরে ধীরে তারা সভ্য হয়ে ওঠে। আজকে দারোগা পুলিশ পর্যন্ত তুই তোকারি করে কথা বলার সাহস পায়না তাদের সঙ্গে। বরং চেয়ার ছেড়ে তাদের বসতে দেয়। এভাবেই গারো চাষীরা নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে শেখে।


"২৫- ৩০ বছর আগেকার কথা" -পঁচিশ ত্রিশ বছর আগেকার কাহিনীটি 'ছাতির বদলে হাতি' প্রবন্ধ অনুযায়ী বিবৃত করো।


অথবা 

" বানানো গল্প নয়"- কোন গল্প ?সেই গল্পটির বর্ননা প্রবন্ধ অনুযায়ী লেখো। 


                                                          উত্তর 


ভূমিকাঃ- ২৫-৩০ বছর আগেকার কাহিনী বিবৃত করেছেন সমাজ সচেতন প্রাবন্ধিক সুভাষ মুখোপাধ্যায় 'আমার বাংলা ' প্রবন্ধের অন্তর্গত 'ছাতির বদলে হাতি 'রচনায়। উত্তর -পূর্ব ভারতের জনজাতির উপর জমিদার ,পাওনাদার ,মহাজন ও ব্রিটিশদের অত্যাচার প্রজাদের কীরূপ দুরবস্থা করেছিল তার উল্লেখ আছে। প্রাবন্ধিক জানিয়েছেন -"মনমোহন মহাজন গত হয়েছেন অনেকদিন ,কিন্তু সেই মহাজনের পন্থা আজও টিকে আছে। " অর্থাৎ প্রজাদের উপর অত্যাচার করার প্রথা যারা চালু করেছিলেন তারা মারা গেলেও প্রথাগুলি পূর্ব ভারতে আজও প্রচলিত। 

উল্লেখিত গল্প ও কাহিনী :- চেংমানের উপর মহাজন মনমোহনের অত্যাচারের গল্প আলোচ্য অংশে উলেখ করা হয়েছে। প্রাবন্ধিকের মতে প্রায় 25 থেকে 30 বছর আগে হালুয়াঘাট বন্দরে সওদা করতে এসেছিল চেংমান। কিছুক্ষণ পরে মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হয়। বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আশ্রয় নেয় মহাজন মনমোহনের দোকানের বারান্দায়। কুটবুদ্ধিসম্পন্ন মহাজন সুকৌশলে কলকাতা থেকে আনা নতুন ছাতাটি মেলে ধরে চেংমানের মাথার উপরে। মহাজনের এরূপ আচরণে স্থম্ভিত হয়ে যায় চেংমান। মহাজন তার মনের অবস্থা বুঝে বলেন- "নগদ পয়সা নাই বা দিলে, যখন তোমার সুবিধে হবে দিয়ে গেলেই হল। ওর জন্য কিছু ভেবোনা।" সরল গারো চাষী মহাজনের  কৌশল বুঝতে না পেরে নতুন ছাতা মাথায় দিয়ে মহা ফুর্তিতে বাড়ি চলে যায়।প্রত্যেক দিনে চেংমান হালুয়াঘাট বন্দরে সওদা  করতে এসে ধারের ছাতির দাম মিটিয়ে দিতে চায়। কিন্তু কূটনীতিবিদ মনমোহন মহাজন চেংমানের কথায় কান না তুলে এড়িয়ে যান। মহাজন সুযোগ বুঝে চেংমানকে আশ্বস্ত করে বলেন, সময় মতো দাম মিটিয়ে দেওয়ার। এভাবে দেখতে দেখতে এক বছর কেটে যায় মাথা থেকে ছাতির দামের কথা মুছে যায়। কয়েক বছর পর হঠাৎ একদিন ধরে ফেলে মহাজন। মহাজন হিসাব কষে দেখলেন ছাতির দাম চক্রবৃদ্ধি সুদের হারে হয়েছে হাজার টাকা। ফলে মনমোহন মহাজন চেংমানের থেকে প্রায় একটি হাতির সমমূল্যে ৩৬বিঘা জমি কেড়ে নেয়। 

                                                                                  প্রাবন্ধিক বলেছেন ঘটনাটি বিশ্বাসযোগ্য না হলেও ডালু -হাজং -গারো জনজাতিরা এর সাক্ষী। আজও সেখানে গেলে এরূপ মহাজনী প্রথার প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। আর এভাবে মহাজনরা দুস্থ সরল প্রজাদের সর্বশান্ত করে। 


READ MORE RELATED POST...........


তোমরা হাত বাড়াও তাকে সাহায্য করো। ......


গারো পাহাড়ের নিচে বসবাসকারী অধিবাসীদের জীবনযাত্রা। .....

Post a Comment

1 Comments