"বিংশ শতাব্দীর সকল ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি"- পাবলো নেরুদা


              "অসুখী একজন "

                        কবিপরিচিতি 

জন্ম ও পরিচয়:-পাবলো নেরুদা ছিলেন একজন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ ও চিলিয়ান কবি। তিনি ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দদের ১২ই জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। বিংশ শতকের সামগ্রিক বিষয়সমূহকে প্রেক্ষাপট করে কবিতা লেখেন। 


সাহিত্য সম্ভার:-পাবলো নেরুদার উল্লেখযোগ্য রচনা হল-"ক্রোপানাকুলাবি"(১৯২৩),"টোয়েন্টি পোয়েমস অব লাভ অ্যান্ড ওয়ান ডেসপারেট সঙ "(১৯২৫),"জেনারেল সঙ্"(১৯৫৪),"এলিমেন্টাল ওডস্"(১৯৫৪)প্রভৃতি। 


প্রাপ্ত পুরস্কার :-পাবলো নেরুদা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭১ সালে নোবেল পুরস্কার পান। 


রাজনৈতিক জীবন:-নেরুদা বহু কূটনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি চিলিয়ান কমিউনিস্ট পার্টিতে সেনেটরের পদ সামলেছেন। কিন্তু চিলির রাষ্ট্রপতি গঙ্জ্ঞালেস ভিদিলা  কমিউনিস্ট পার্টিকে নিশ্চিহ্ন করার পদক্ষেপ নিলে নেরুদা চিলি থেকে পালিয়ে আর্জেন্টিনায় চলে যান। 

মৃত্যু:- অবশেষে ক্যান্সারের আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু তিনদিন পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৩ সালের ২৩শে নভেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এরূপ কিংবদন্তির মৃত্যুতে সারা বিশ্বে আলোড়ন পড়ে যায়। 

                    "বিষয়বস্তু "

কবিতায় 'আমি "অর্থাৎ কবি তার প্রিয়তমাকে  (স্বদেশ ভুমি)
দরজায় অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে চলে যান বহু দুরে। সে জানতেই পারলো না যে কথক আর কখনো ফিরে আসবেন না। যাওয়ার সময় হেটে গেল একটা কুকুর। আবার হেটে গেলেন গির্জার এক নান বা সন্ন্যাসিনী। কেটে যায় একটা সপ্তাহ থেকে বছর। কবির পায়ের দাগ ধুয়ে দিল বৃষ্টি। পথ ঢেকে গেল ঘাসে। অপেক্ষারত মেয়েটির কাছে বছরগুলো নেমে আসলো পাথরের মতো। 

**এক সময় রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মতো যুদ্ধ নেমে এল সমতলে। বহু শিশু মারা গেল, ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেল। যুদ্ধের আগুন সমস্ত সমতলে ধরে গেল ।হাজার বছর ধরে যে শান্ত হলুদ দেবতারা ধ্যানে মগ্ন ছিল, তারাও মন্দির থেকে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তাঁরা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না। 
একসময় যে মিষ্টি বাড়ির বারান্দার ঝুলন্ত বিছানায় কবি ঘুমিয়েছিলেন।সেই বারান্দার গোলাপী গাছ, হাতের তালুর মতো পাতা, চিমনি,প্রাচীন জলতরঙ্গ বা বাদ্য যন্ত্র প্রভৃতি নিঃশ্বেষ হয়ে যায়। যুদ্ধ শেষে দেখা যায় কবির বাসভুমি তথা সমতলে পড়ে থাকলো কাঠকয়লা, দোমড়ানো লোহা,মূর্তির বিভৎস মাথা আর রক্তের এক কালো দাগ। 

                                     ---------
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর :-

1.'অসুখী একজন '-কবিতার কবি পাবলো নেরুদা কোন দেশের কবি?
উ-চিলি। 
2."অসুখী একজন "- কবিতাটি কে অনুবাদ করেছেন ?
উ-নবারুণ ভট্টাচার্য।
3."অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে "-কোথায় দাঁড় করিয়ে রাখে?
উ-দরজায়। 
4."অসুখী একজন "-কবিতায় কার মৃত্যু হয়নি?
উ-মেয়েটির। 
5.কোথায় আগুন ধরে গেল?
উ-সমতলে। 
6.দেবতারা কীসে ডুবে ছিল?
উ-ধ্যানে।
7."তারপর যুদ্ধ এল "-যুদ্ধকে কিসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
উ-আগ্নেয়পাহাড়। 
8."অসুখী একজন "-কবিতায় কারা খুন হল?
উ-শিশু আর বাড়ি। 
9."বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল "-বৃষ্টিতে কী ধুয়ে দিল?
উ-পায়ের দাগ। 
10."হেটে গেল "-কী?
উ-কুকুর। 
11."চলে গেল গির্জার "- কে?
উ-নান 
12."আমি তাকে ছেড়ে দিলাম "-কাকে?
উ-সেই মেয়েটিকে। 
13."নেমে এল তার মাথার ওপর "-কী নেমে এল?
উ-বছর। 
14.রাস্তায় কী জন্মাল?
উ-ঘাস। 
15.দেবতারা কত বছর ধ্যানে ডুবে ছিলেন?
উ-হাজার বছর। 
16.রক্তের দাগ কেমন?
উ-কালো। 
17.কোথায় কাঠকয়লা ছড়িয়ে রইল?
উ-শহরে। 
18.সবকিছু কীসে জ্বলে গেল?
উ- আগুনে। 
19.কথক কোথায় ঘুমিয়েছিলেন?
উ-ঝুলন্ত বিছানায়। 
20.কারা মন্দির থেকে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়?
উ- দেবতারা। 

এক কথায় প্রশ্ন ও উত্তর -                                মান-1
1."অসুখী একজন "-কবিতায় প্রকৃত পক্ষে অসুখী কে?

উ-কবিতায় স্বদেশ ভুমি ছেড়ে বিভুই বাসী কথক তথা কবি পাবলো নেরুদা  স্বয়ং  অসুখী ।

2."সে জানত না "-'সে '-কী জানতো না?

উ-'অসুখী একজন '-কবিতায়  ,কবির নারীকল্প স্বদেশ ভুমি জানত না,যে কথক আর কখনো ফিরে আসবেন না। 

3."আমি চলে গেলাম দুর-দুরে "-কবি কেন দুরে গেলেন?

উ-কবি দেশের একজন সুসন্তান, যাঁর অন্তরে আছে দেশপ্রেম।তাই দেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে নিজের প্রতিবাদ মননে জাগ্রত কবি দুর দেশে চলে যেতে বাধ্য হয়। 

4."নেমে এল তার মাথার ওপর "-কী, কীসের মতো নেমে এল?

উ-" "অসুখী একজন "-কবিতায় পাবলো নেরুদা অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে যাকে ছেড়ে আসেন, তার মাথার ওপর বছরগুলো একের পর এক পাথরের মতো নেমে আসে। 

5.দেবতারা কেন আর স্বপ্ন দেখতে পারল না?

উ-শান্ত হলুদ দেবতারা, যারা হাজার বছর ধরে ধ্যানে ডুবে ছিল,তারা মন্দির থেকে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায় বলে আর স্বপ্ন দেখতে পারল না। 

6."সব চূর্ণ হয়ে গেল "-কী কী চূর্ণ হয়ে যায়?

উ-কবির প্রিয় বাড়ি, তার প্রিয় বারান্দা, গোলাপি গাছ, ছড়ানো করতলের মতো পাতা, চিমনি ও প্রাচীন জলতরঙ্গ যুদ্ধের কারণে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। 

7."সমস্ত সমতলে ধরে গেল আগুন "-কেন?

উ-পালবো নেরুদার প্রিয় শহরের জনবসতি অত্যন্ত ঘন ছিল, বাড়িগুলো পর পর গড়ে উঠেছিল। সেজন্য যুদ্ধের আগুন সমস্ত সমতলে ধরে গেল। 

8-"রক্তের একটা কালো দাগ "- বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

উ-যুদ্ধ ক্রমান্বয়ে হত্যা চালায় ,ফলে বহু রক্তপাত ঘটে। সেই রক্ত শুকিয়ে গেলে রং কালো হয়ে যায়। সেই রক্তের কালো দাগ যুদ্ধের ভয়ঙ্করতার স্মৃতি বহন করে। 

9."সেই মেয়েটির মৃত্যু হল না "-কেন?

উ-কবিকথিত "সেই মেয়েটি "-আসলে মাতৃকল্প দেশ। যুদ্ধ বাধলে সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু কালচক্রে সেই দেশে পুনরায় নতুন সভ্যতা গড়ে উঠে। তাই যুদ্ধে সবকিছু ধ্বংস হলেও সেই মেয়েটির মৃত্যু বা ধ্বংস হয়নি। 

10."সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় "-কে কার জন্য অপেক্ষা করছিল?

উ-পাবলো নেরুদার "অসুখী একজন " কবিতাই  'সেই মেয়েটি 'অর্থাৎ কবির স্বদেশ ভুমি কবির জন্য অপেক্ষা করছিল। 


 
•TIPS- 1.বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর শুধুমাত্র সঠিক বিকল্পটি বেছে নিয়ে লিখতে হবে। সম্পূর্ণবাক্যে উত্তর করা আবশ্যিক নয়। 

2.এককথায়  প্রশ্নের উত্তর কমবেশি 20 টি শব্দে লিখতে হবে। 

3.উৎস না চাইলেও উৎস উল্লেখ করে সম্পূর্ণ বাক্যে উত্তর করতে হবে অতিসংক্ষিপ্ প্রশ্নোত্তরের। 

(ব্যাখ্যামূলক এবং  রচণাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর ও পেয়ে যাবে কিছু দিনের মধ্যেই )
___________________________________________________





Post a Comment

0 Comments