কোনি গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর ।। মাধ্যমিক বাংলা

 পড়াশোনা:-    মাধ্যমিকের বাংলা "কোনি " থেকে গুরুত্বপূর্ণ বাছাই করা প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হলো। মাধ্যমিকের  পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে প্রশ্ন উত্তর  সাজানো হয়েছে। তবে প্রতি বছরের জন্য এই প্রশ্ন উত্তরগুলি  অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীরা খুজে চলেছে - কোনি গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর 2023 / কোনি প্রশ্ন উত্তর / কোনি গল্পের সাজেশন / কোনি উপন্যাসের প্রশ্ন উত্তর PDF / কোনি উপন্যাসের প্রশ্ন উত্তর / কোনি উপন্যাসের ছোট প্রশ্ন উত্তর /  কোনি বড়  প্রশ্ন উত্তর প্রভৃতি। 

■ আশা করি তোমাদের পড়াশোনা বেশ ভালই হচ্ছে। মাধ্যমিকের প্রায় সব বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর আমরা আপলোড করে চলেছি।  তোমাদের কথা ভেবেই আজকে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তরের PDF দেওয়া হলো। বার্ষিক পরীক্ষায় 99% সম্ভাবনা আসার।  

 ক্রমিক নং  আলোচ্য প্রশ্ন 
1 'কোনি'- উপন্যাস অবলম্বনে কোনি চরিত্রটি
 বিশ্লেষণ করো।
2 'কোনি' রচনা অবলম্বনে ক্ষিতীশের চারিত্রিক
 বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
3"কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটা তো আমার পা
 ধোয়া জল খাবে"- কার উক্তি? মেয়েটা পা
 ধোয়া জল খাবে বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
4 "এটা বুকের মধ্যে পুষে রাখুক।"-বুকের মধ্যে
 কী পুষে রাখার কথা এখানে বলা হয়েছে ?
খিদ্দা কেন এই পুষে রাখার কথা ভাবছেন?
5 "আজ বারুণী। গঙ্গায় আজ কাঁচা আমের
 ছড়াছড়ি।"- বারুণী কী? বারুণীর গঙ্গাতীরের
 বর্ণনা দাও।
6 দারিদ্র আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির যে লড়াই
 তা সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
7 ক্ষিতিশ সিংহ কোনিকে সাঁতারের চ্যাম্পিয়ন
 করানোর জন্য যে কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা
 করেছিলেন তার পরিচয় দাও।
8 ''অবশেষে কোনি বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল''-
 বাংলা সাঁতার দলে কোনিকে স্থান দেওয়ার জন্য
 কে কীভাবে লড়াই করে সাফল্য পেয়েছিল তা
 নিজের ভাষায় লেখ।
9  “ফাইট কোনি, ফাইট”- সাধারণ সাঁতারু থেকে
 চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে গিয়ে কোনিকে কী
 ধরনের ‘ফাইট’ করতে হয়েছিল, নিজের
 ভাষায় লেখ। 
10 “ওইটেই তাে আমি রে, যন্ত্রণাটাই তাে আমি”-
 বক্তা কে? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে



1. 'কোনি'- উপন্যাস অবলম্বনে কোনি চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।  ৫

                                 -উত্তর-

ভূমিকাঃ-  'কোনি' উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হলো কোনি। ক্ষিতীশের অভিভাবকত্বে কোনির সকল বাধা জয় করে জীবনের বিজয়স্তম্ভে উত্তীর্ণ হওয়ায় এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য বিষয় ।ক্ষিতীশ কোনিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, সহিষ্ণুতা শিখেছেন, জয়লাভের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। অন্যদিকে কোনি ক্ষিতীশকে পূর্ণতা এনে দিয়েছে। কোনিকে ছাড়া ক্ষিতীশ অসম্পূর্ণ। একজন গুরু তার সৃষ্টির মধ্য দিয়েই নিজেকে তুলে ধরে এবং আত্মপ্রকাশ করে। কোনি ক্ষিতীশকে সেই আত্মপ্রতিষ্ঠা দানে সহায়তা করেছে।

চারিত্রিক দৃঢ়তাঃ- কোনি দরিদ্র পরিবারের সন্তান জন্ম থেকেই দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী। গঙ্গায় আম কুড়ানো নিয়ে ঝগড়ায় হোক বা হিয়া মিত্রের হাতে আঘাত করে জল ফেলে দেওয়া হোক, সবকিছুর মধ্যেই তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তা প্রকাশিত হয়েছে।

জেদি মানসিকতাঃ- কোনি চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তার জেদ। জীবনের প্রথম প্রতিযোগিতায় হিয়ার কাছে হেরে যাওয়ায় সে তা ভুলতে পারেনি। জেতার জেদ তার চোয়ালকে আরো কঠিন করে তুলেছিল। বড়োলোকের মেয়ে হিয়াকে চড় মারতেও তার হাত কাঁপেনি। এই  জেদকে কাজে লাগিয়েই ক্ষিতীশকে কোনিকে নিয়ে গেছেন সাফল্যের চূড়ায় ।

ক্ষিতীশের সঙ্গে বোঝাপড়াঃ- ক্ষিতীশ কোনির জীবনে এসেছে দেবদূতের মতো। অন্যদিকে কোনিকে খুঁজে পেয়ে ক্ষিতীশের জীবনের মোড় ঘুরে গেছে। তারা একে অপরকে অবলম্বন করেই সাফল্যের মুখ দেখেছে। 

জয়লাভঃ- উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কোনি হলেও তার জয়লাভ সহজে আসেনি। নানান বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করেই কোনি সাফল্য পেয়েছে। তাই বলা যায় কোনি চরিত্র লেখকের মানস কন্যা বললেও অতিকথন হয় না ।


2. 'কোনি' রচনা অবলম্বনে ক্ষিতীশের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো। ৫

                              -উত্তর-

বুদ্ধিমানঃ- উপন্যাসের শুরুতেই বিষ্টু ধরের সঙ্গে দুষ্টুমি করতে দেখা যায় ক্ষিতীশক সিংহকে। তার এরূপ আচরণের মধ্য দিয়েই তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। আবার জুপিটার ক্লাবের বার্ষিক প্রতিযোগিতায় কোনিকে প্রবেশের অধিকার দেওয়া না হলে প্রতিযোগিতার বাইরে থেকেও কোনি যাতে সকলের সামনে অমিয়াকে হারাতে পারে, সে বুদ্ধির উৎস ছিলেন ক্ষিতীশই।

অভিজ্ঞঃ- পঁয়ত্রিশ বছরের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক। লেখক তাঁর  চেহারার বর্ণনায় দুচোখে অভিজ্ঞতার স্পষ্ট ছাপ দেখিয়েছেন। এই অভিজ্ঞতাই তাঁকে সাহায্য করেছে প্রথম দৃষ্টিতেই কোনির ভেতরের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়নকে চিনে নিতে ।

দৃঢ় মানসিকতাঃ- ক্ষিতীশ কোনিকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য খেটেছেন, দৃঢ় মনোভাব দেখিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময় ধরে কোনিকে জলে অনুশীলন করিয়েছেন। আবার নানান বাধা-বিপত্তি আসলে সহজে ভেঙে পড়েননি। দৃঢ় চিত্তে সেই সকল বাধাকে অতিক্রম করে কোনিকে সাফল্যের শীর্ষে তুলে ধরেছেন।

 প্রকৃত গরু ও সন্তান স্নেহঃ- ক্ষিতীশের চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তারঁ সন্তানস্নেহ ও প্রকৃত গুরুর দায়িত্ব পালন।  তিনি যেমন গুরুর দায়িত্ব পালন করছেন তেমনি পিতার ভূমিকাও পালন করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি যে খুব সংসারী লোক তা নন । তার স্ত্রীর প্রতি যেমন সহিষ্ণুতা ছিল তেমনি কোনির প্রতিও তার স্নেহের প্রকাশ লক্ষ করা যায়। 

দার্শনিকঃ- ক্ষিতীশের অন্তরের দার্শনিক সত্তা কোনিকে সঠিক পথ দেখাতে বেরিয়ে আসত। কখনো সময় ও যন্ত্রণার পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝাতে, কখনো ক্ষমতাকে অতিক্রম করে গেলে কীভাবে মানবজাতির মান বৃদ্ধি পাবে- সর্বত্রই ছিল এই দার্শনিককের অবাধ বিচরণ ।


3. "কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটা তো আমার পা ধোয়া জল খাবে"- কার উক্তি? মেয়েটা পা ধোয়া জল খাবে বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ১+৪=৫

                            - উত্তর-

 উক্তিটির বক্তাঃ- ক্ষিতীশ যখন জুপিটার সুইমিং ক্লাবের প্রশিক্ষকের পদে ছিলেন তখন অমিয়া ও বেলা নামে দুজন মহিলা সাঁতারু সেখানে প্রশিক্ষণ নিত। কিন্তু ক্ষিতীশের শাসন ও বিদ্রুপ সহ্য করতে না পেরে ও ক্ষিতীশের প্রতি তীব্র ক্ষোভে তাঁর ক্লাব ছেড়ে অ্যাপোলোতে যোগ দিয়েছিল। সেখানেই কোনিকে দেখে প্রবল হিংসায় অমিয়া আলোচ্য উক্তিটি করেছিল।

 উক্তিটির অন্তর্নিহিত অর্থঃ- অমিয়ার কোনির সম্পর্কে করা আলোচ্য উক্তিটির উদ্দেশ্য ছিল যত না কোনি, তার চেয়ে বেশি তার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ। জুপিটার ক্লাবে ক্ষিতীশের  কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় অমিয়া ও বেলা তাদের অখেলোয়াড়ি মনোভাব, আচার-আচরণ, পোশাক ও সাজগোজ নিয়ে ক্ষিতীশের কাছে যথেষ্ট অপমানিত হয়েছিল। একদিক থেকে ক্ষিতীশের জন্যই তারা জুপিটার ছেড়েছে ।সেই ক্ষিতীশের শিষ্য কোনির প্রতি তাদের ঈর্ষা কাজ করাই স্বাভাবিক। এছাড়া অমিয়ার অহংকার ও ঔদ্ধত্য তাকে দিয়ে এ ধরণের উক্তির করিয়েছে। 


4. "এটা বুকের মধ্যে পুষে রাখুক।"-বুকের মধ্যে কী পুষে রাখার কথা এখানে বলা হয়েছে ?খিদ্দা কেন এই পুষে রাখার কথা ভাবছেন? ২+৩=৫ 

                              -উত্তর-


বুকের মধ্যে পুষে রাখা যন্ত্রণাঃ- দাদা কমলের স্বপ্ন ছিল বড়ো সাতারু হওয়ার। কিন্তু দারিদ্রতার কারণে ও বাবা মারা যাওয়ায় তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ফলে বোন কোনিকে সে বড়ো সাঁতারু বানাতে চায়। কিন্তু প্রশিক্ষণহীন কোনি জীবনে প্রথমবার রবীন্দ্র সরোবরের সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল ।তার দাদা তাকে প্রথম হওয়ার প্রতিজ্ঞা করিয়ে নেয়। এজন্য ধার করে কোনির দাদা একটি সুইমিং কস্টিউম এনে দিয়েছিল। কিন্তু প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনি হিয়া মিত্রের কাছে হেরে যায় ।এই পরাজয়ের যন্ত্রণা কোনি কোনদিনও ভোলেনি। একদিকে জীবনের প্রথম পরাজয়ের গ্লানি, অন্যদিকে দাদাকে দেওয়া কথা রাখতে না পারার যন্ত্রণা বুকে যেন আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল কোনির। তার বুকে যন্ত্রণা ও প্রতিশোধ স্পৃহা পুষে রাখার কথা এখানে বলা হয়েছে। 


ক্ষিদ্দার ভাবনার কারনঃ- ক্ষিতীশ সিংহ লক্ষ্য করেছিলেন কোনির মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রতিভা রয়েছে। তবে প্রতিভা থাকলেই মানুষ সফলতা পায় না । তার জন্য চাই মনের খিদে এই খিদে থাকাটা অত্যন্ত জরুরী জীবনে সাফল্য পাওয়ার জন্য। ক্ষিতীশ সিংহ কোনির মধ্যে জেতার জন্য এই ক্ষিদে তৈরি করতে চেয়েছিলেন। গরিব ঘরের মেয়ে কোনির মধ্যে রাগ ও যন্ত্রণা লক্ষ করে তিনি সেটাকে ধরে রাখার চেষ্টা করেন। চিড়িয়াখানায় বেড়াতে গিয়ে হেয়ার স্কুলের শিক্ষিকার কাছে জল চেয়ে অপমানিত কোনির দিকে ভদ্রতাবশত হিয়া জলের গ্লাস এগিয়ে দিলে কোনি সেটা সটান ফেলে দেয়।এই ব্যবহারে ক্ষিতীশ আহত হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে কিছুই বলেননি। কারণ তিনি চেয়েছিলেন হেয়ার প্রতি তার এই রাগ যন্ত্রনা বুকের মধ্যে পুষে রাখুক। তবেই সাঁতারের প্রতিযোগিতায় হিয়া মিত্রকে কোনি হারাতে পারবে এবং ধীরে ধীরে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাবে ।

■ অবশেষে ক্ষিতীশ সিংহ কোনির মনের মধ্যে খিদে তৈরি করতে সফল হন এবং কোনি প্রতিযোগিতায় হিয়া মিত্রকে পরাজিত করে । মনের মধ্যে থাকা খিদে কোনিকে এক সময় চরম সাফল্য এনে দেয় ।


5."আজ বারুণী। গঙ্গায় আজ কাঁচা আমের ছড়াছড়ি।"- বারুণী কী? বারুণীর গঙ্গাতীরের বর্ণনা দাও।

 অথবা "আজ বারুণী"- বারুণীর দিনে গঙ্গার ঘাটের পরিচয় দাও। ৫

                                                উত্তর 


বারুণী উৎসবঃ- বাংলা কথা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক মতি নন্দীর 'কোনি' উপন্যাস থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত হয়েছে। 'বারুণী' হল শতভিষা নক্ষত্র যুক্ত কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে স্নানাদি পালনীয় পর্ব বিশেষ । বর্তমানে এটি লৌকিক উৎসবের মর্যাদা পেয়েছে ।বারুণী উৎসবে মূলত জলদেবতার পূজা করা হয়। তাই এদিন জলাশয়ে প্রচুর জনসমাগম হয়। এই সময় ধর্মপ্রাণ মানুষ গঙ্গা নদীতে আম নিবেদন করেন।  এদিন গঙ্গায় স্নান করলে নাকি শত শত সূর্য গ্রহণে গঙ্গাস্নানের ফল পাওয়া যায়।

 গঙ্গার ঘাটের পরিচয়ঃ- পুণ্য সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে আগত পুণ্যার্থীরা গঙ্গায় ফুল, বেলপাতা সঙ্গে কাঁচা আম দেয়। সেই আম তুলে বাজারে কম দামে বিক্রির লোভে ছোটো ছোটো দলে ছেলেমেয়েরা ঘাটে ভিড় করে আছে। ছেলের দল কেউ গঙ্গা জলে দাঁড়িয়ে, কেউবা জলে ভেসে রয়েছে একটু দূরে, একটা আম জলে পড়লেই তাদের মধ্যে হুড়োহুড়ি কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। আম পেলেই পকেটে ঢুকিয়ে রাখে। আর পকেট ভরে এলে ঘাটের কোথাও রেখে আসে।

■■ পুণ্যার্থীরা স্নান করে কাঁদা মেখে ঘাটে উঠে এসে কেউ কেউ যায় ঘাটের মাথায় ট্রেন লাইনের দিকে মুখ করে বসে থাকা বামুনদের কাছে, যারা পয়সা নিয়ে জামাকাপড় রাখে, গায়ে মাখার জন্য নারকেল বা সরষের তেল দেয়, কপালে আঁকে চন্দনের ফোটা, কেউ কেউ আবার বাজার থেকে ওর বা থোড় বা কমলালেবু জাতীয় কিছু কিনে রোদে তেতে ওঠা রাস্তায় দ্রুত পা চালিয়ে বিরক্তির মেজাজে বাড়ি ফিরতে থাকে ।


6.দারিদ্র আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির যে লড়াই তা সংক্ষেপে আলোচনা করো । ৫

                             উত্তর 

ভূমিকাঃ-কোনিকে নিয়ে ক্ষিতীশ বাবু নতুন করে নিজেকে প্রমাণ করার স্বপ্ন দেখছেন।কঠোর শ্রমসাধ্য ট্রেনিংয়ে বেঁধেছেন কোনিকে। কোনিও কোনদিন কামাই করে না। এরকম পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে কোনি ট্রেনিংএ আসা বন্ধ করে দেয়। ক্ষিতীশ সিংহ দুশ্চিন্তায় একদিন কোনির খোঁজে তাদের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তাদের দারিদ্রতা ও বঞ্চনার পরিচয় পান।

দারিদ্র্যতাঃ- কোনি ওরফে কনকচাঁপা পাল অতি দারিদ্র্য পীড়িত সংসারের মেয়ে। তাদের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে বড়ো ভাই কমল মুখে রক্ত উঠে মারা গেছে । তাই কোনির সামনে আজ লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া নয়, প্রধান চিন্তা খাদ্য। এক কঠোর পরিস্থিতির সম্মুখীন কোনি এবং তার পরিবার। সহমর্মিতাই বাস্তবতা উপলব্ধি করে আশঙ্কায় কেঁপে উঠেন ক্ষিতীশবাবু ।যে সাধনা নিয়ে তিনি কোনিকে তৈরি করছিলেন সহসা তা বাধাপ্রাপ্ত হয়। দাদার মৃত্যুর পর কীভাবে এই মেয়েটি সাঁতার শিখবে, তা ভেবে পান না ক্ষতীশবাবু ।খুব ক্লান্ত ও খুব অসম্ভব শান্ত গলায় ক্ষিতীশ বাবুকে কোনি বলেছিল এবার থেকে হয়তো তাদের খাওয়া জুটবে না। 

কোনির জীবন সংগ্রাম:- কোনি যেন ছিল বঞ্চনার আর এক নাম ।  ক্ষিতীশ কোনিকে সাঁতার শেখানোর জন্য জুপিটার ক্লাবে নিয়ে গেলে ক্ষিতীশ এর বিরুদ্ধে হরিচরণ ,ধীরেন ঘোষ বদু চাটুজ্জে ,বিনোদ ভর ষড়যন্ত্র করে ক্ষিতীশ এর ছাত্রী কোনিকে ভর্তি নেয়নি।এমনকি জুপিটার সুইমিং ক্লাব এর বার্ষিক প্রতিযোগিতায় কোনির প্রবেশাধিকার গৃহীত হয়নি। কিন্তু অ্যাপোলোর অংশের জলে সাতার প্রতিযোগিতার বাইরে থেকেও অমিয়াকে হারিয়ে দেয় কোনি । মাদ্রাজের জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে দল নির্বাচনের সময়ও কোনিকে প্রায় বাদে দেওয়া হচ্ছিল, ভাগ্যক্রমে বালিগঞ্জ ক্লাবের ট্রেনার প্রণবেন্দুর উদ্যোগেই বাধ্য হয়ে হরিচরন দলে নেয়। কিন্তু মাদ্রাজে নানান বাধার সম্মুখীন হতে হয় । অমিয়া, বেলা  প্রমুখেরা কোনিকে চোর বদনাম দেয় ।ওকে বিনা দোষে চড় মারে ।অবশেষে ভাগ্যের কারণে কোনিকে দলে স্থান দিতে হয় এবং শেষে সারা দেশের সেরা সাঁতারুকে পরাজিত করে বাংলার হাতে ট্রফি এনে দেয় কোনি ।


7. ক্ষিতিশ সিংহ কোনিকে সাঁতারের চ্যাম্পিয়ন করানোর জন্য যে কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলেন তার পরিচয় দাও।

                             -  উত্তর -


উত্তরের প্রথম অংশ:- উদ্ধৃত অংশটি জনপ্রিয় লেখক মতি নন্দীর কোনি উপন্যাস থেকে গৃহীত হয়েছে। উক্তিটির বক্তা হলেন ক্ষিতীশ সিংহ। তিনি কোনির উদ্দেশ্যে এই উক্তি করেন।



উত্তরের দ্বিতীয় অংশ:- শারীরিক যন্ত্রণা মানুষকে পীড়া দেয় এবং এই একটি যন্ত্রণা এক দিকে যেমন মানুষকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয় আবার তেমনি এই যন্ত্রণা মানুষকে পৌঁছে দেয় তা সফলতার লক্ষে। যেমন রোগ ব্যাধির যন্ত্রণা মানুষকে ধ্বংস করে কিন্তু প্রশিক্ষণ লাভের জন্য যন্ত্রনা মানুষকে প্রতিষ্ঠিত করে।

একজন সুইমারের জন্য যন্ত্রণা আর সময় -এ দুটো হল মূল ব্যাপার। তাদের লড়াইয়ের উদ্দেশ্যই হলো এই দুটোকে জয় করা। মানুষের জীবনে যে কোনো সাফল্যের পিছনে শর্ত হলো কঠোর পরিশ্রম। নিষ্ঠা ও আন্তরিক মানসিকতা নিয়ে যদি কেউ কঠোর পরিশ্রম করে তাহলে লক্ষ্যে সে পৌঁছাবেই।

ঠিক এখানেও ক্ষিতীশ সিংহ কোনিকে ট্রেনিংয়ের প্রথম দিন থেকে কঠোর পরিশ্রম করার পরামর্শ দেয় এবং এ প্রসঙ্গে তার অভিমত এই যে, সাধ্যের বাইরে গিয়ে পরিশ্রম করে নিজেকে ঠেলে নিয়ে যেতে হবেই, নয়তো কিছুতেই সাধ্যটাকে বাড়ানো যাবে না।

প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীতে যত মহাপুরুষের আবির্ভাব হয়েছে তারা প্রত্যেকেই সাধ্যের বাইরে পরিশ্রম করে যন্ত্রণার সঙ্গে, কষ্টের সঙ্গে নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়েছেন এবং তার ফলেই তারা বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় এক একটা উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। সুইমারের যুদ্ধ সময় ও যন্ত্রণার সঙ্গে। অর্থাৎ যন্ত্রণাকে যে যত সইতে পারবে, কঠোর পরিশ্রম করবে , ততই সে কম সময়ে লক্ষ্যে পৌঁছবে। অর্থাৎ হার মানাবে সময়কে এবং যন্ত্রণাকে।  সেই হয়ে উঠবে চ্যাম্পিয়ন, যে সবার আগে সবচেয়ে কম সময়ে পৌঁছবে তার গন্তব্যে। তাই কোনিকেও চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম এবং তার সঙ্গে সময়কে হার মানানো। সেই প্রসঙ্গে ক্ষিতীশ সিংহ এই উক্তি করেছিলেন।



8. ''অবশেষে কোনি বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল''- বাংলা সাঁতার দলে কোনিকে স্থান দেওয়ার জন্য কে কীভাবে লড়াই করে সাফল্য পেয়েছিল তা নিজের ভাষায় লেখ। ৫



                                                     -  উত্তর -

দলে কোনিকে স্থান দেওয়ার লড়াই:- মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য BASA নির্বাচন সভায় বালিগঞ্জ ক্লাবের হিয়া মিত্রের সাঁতার প্রশিক্ষক প্রণবেন্দু বিশ্বাস কোনিকে দলে রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই প্রস্তাব মেনে নিতে জুপিটার ক্লাবের সদস্যদের আপত্তি ছিল তা বলাই বাহুল্য।  কারণ ক্ষিতীশের প্রতি তাদের বিরোধিতা কোনিকেও রেহাই দেয়নি। কোনির পক্ষ নিয়ে যে প্রণবিন্দু লড়াই করবেন তা তারা ভাবতে পারেননি। তাই তার প্রস্তাবে ক্ষুদ্দ হয়ে ধীরেন ঘোষ স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে কোনির কৃত্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চান। সেখানে তিনটি আলাদা আলাদা ইভেন্টের দুটিতে  ডিসকোয়ালিফাই করা হয়েছিল ও একটি ইভেন্টে প্রথম হওয়া সত্বেও তা মেনে নেওয়া হয়নি। প্রণবেন্দু এই কথা বলায়, ধীরেন ঘোষ অধৈর্য্য হয়ে টেবিলে ঘুষি মেরে চিৎকার করে কোনিকে দলে নেওয়ার বিরুদ্ধে জানান যে, কোনির টাইমিং জানা নেই বলে তাকে দলে নেওয়া সম্ভবপর নয়। এ কথা শুনে প্রণবেন্দু ধীর স্বরে ঘোষণা করেন যে, তাহলে বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের সুইমারদের বাদ দিয়েই বাংলার দল গঠন করতে হবে। তিনি তার মেয়েদের উইড্র করে নেবেন। এটি যে কিছুতেই সম্ভব নয় তার সকলেই জানতো। তাই বাধ্য হয়ে প্রণবেন্দুর প্রস্তাবে সাড়া দিতে হয় সকলকে। তবে ধীরেন ঘোষ এতে প্রণবেন্দুর স্বার্থ খুঁজলে, তিনি জানান যে, মহারাষ্ট্রের রমা জোশিকে আটকানো ছাড়া তার আর কোনো স্বার্থ নেই।


9. “ফাইট কোনি, ফাইট”- সাধারণ সাঁতারু থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে গিয়ে কোনিকে কী ধরনের ‘ফাইট’ করতে হয়েছিল, নিজের ভাষায় লেখ। ৫


                                                             -উত্তর-

ভূমিকাঃ - জনপ্রিয় বিখ্যাত লেখ মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে একজন সাধারণ মেয়ের অসাধারণ সাফল্যের কাহিনি বিবৃত হয়েছে। শ্যামপুকুর বস্তির এক হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে কোনি বহু বাধা পেরিয়ে একসময় ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন সাঁতারু হয়ে ওঠে। কোনির এই উত্তরণ স্বাভাবিক ছন্দে হয়ে ওঠে নি, রীতিমতো তাকে ‘ফাইট’ করেই এগোতে হয়েছে। সাধারণ সাঁতারু থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে গিয়ে কোনিকে যে ধরনের ‘ফাইট’ করতে হয়েছিল তা এইরকম-

দারিদ্রের বিরুদ্ধে ফাইট- কোনির প্রথম লড়াইটা ছিল দারিদ্র্যের সঙ্গে। সে এমন এক পরিবারের মেয়ে যেখানে তিনবেলা খেয়ে-পরে বেঁচে থাকাটাই একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। সুতরাং তার পরিবারের পক্ষে কোনিকে সাঁতার শেখানো তো দূরের কথা, একটা কস্ট্যুম কিনে দেওয়ার সামর্থ্যও তাদের ছিল না। তাছাড়া, দারিদ্রের কারণেই তাকে সাঁতার শেখার শুরুর সময় থেকে মাদ্রাজ পৌঁছনো অবধি নানাভাবে বিদ্রুপের শিকার হতে হয়েছে। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই, ক্ষিতিশের নজরে না পড়লে কোনির সাঁতার শেখাই হতো না।

নিজের সঙ্গে ফাইট- কোনি না ছিল বড়লোক বাড়ির মেয়ে, না ছিল তার তেমন শিক্ষাদীক্ষা। তাই অমিয়া যখন তাকে ‘ঝি’ বলেছিল, সে খুব লজ্জা পেয়েছিল। সে তখন ভেবেছিল যে হাতের লেখাটা ভালো হলে কাউন্টারে বসত। সেটা যখন হয়ে ওঠেনি, কোনি ক্ষিদ্দাকেই প্রশ্ন করে “অমিয়ার রেকর্ডটা কবে ভাঙতে পারবো?” আসলে এটা ছিল তার নিজের সঙ্গে নিজের লড়াই, ক্ষমতা দিয়ে অক্ষমতা ঢাকানোর লড়াই।

ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ফাইট- জুপিটারের ক্ষিতীশবিরোধী ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিল কোনি। তাকে কখনো অন্যায়ভাবে ডিসকোয়ালিফাই করা হয় কখনো হারানোর চেষ্টা করা হয়। এমনকি, বিএএসএ নির্বাচনী সভায় তাকে বাংলা দল থেকে বাদ দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়।

বঞ্চনার বিরুদ্ধে ফাইট- মাদ্রাজে পৌঁছেও কোনিকে নানা অজুহাতে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। একের পর এক প্রতিযোগিতা সে গ্যালারিতে বসে দেখেছে, জলে নামার সুযোগ পায়নি।

তবে, শেষপর্যন্ত সত্যেরই জয় হয়। মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় শেষ মুহূর্তে নামার সুযোগ পেয়ে কোনি নিজের প্রতিভা প্রমাণ করে দিয়েছিল।


10. “ওইটেই তাে আমি রে, যন্ত্রণাটাই তাে আমি”- বক্তা কে? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে। ১+8 

                                                               -উত্তর-


 বক্তা - জনপ্রিয় লেখক মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে কোনির প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ একথা বলেছেন।

 **মাদ্রাজে আয়োজিত ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে শেষ মুহূর্তে জলে নামার সুযোগ পেয়েছিল কোনি। সাঁতারু হিসেবে অংশগ্রহণ করেও তাকে নানা অজুহাতে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। মেয়েদের রিলে রেসের আগে অমিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বিনা প্রস্তুতিতে জলে নামতে হয়েছিল। এতোদিন দর্শকাসনে বসে থাকার পর যখন সে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেল তখন নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে রমা জোশীকে হারিয়ে বাংলার জয় নিশ্চিত করেছিল কোনি। জল থেকে উঠে ক্ষিদ্দাকে নিজের শারীরিক কষ্টের কথা জানালে ক্ষিদ্দা বলেছিলেন, “ওইটেই তাে আমি রে, যন্ত্রণাটাই তাে আমি”।

আসলে, প্রশিক্ষক হিসেবে ক্ষিতীশ সিংহের মূল মন্ত্র ছিল অনুশীলন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে শরীরকে ঘষে ঘষে শানিয়ে তুললে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়।প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীতে যত মহাপুরুষের আবির্ভাব হয়েছে তারা প্রত্যেকেই সাধ্যের বাইরে পরিশ্রম করে যন্ত্রণার সঙ্গে, কষ্টের সঙ্গে নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়েছেন এবং তার ফলেই তারা বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় এক একটা উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। সুইমারের যুদ্ধ সময় ও যন্ত্রণার সঙ্গে। অর্থাৎ যন্ত্রণাকে যে যত সইতে পারবে, কঠোর পরিশ্রম করবে , ততই সে কম সময়ে লক্ষ্যে পৌঁছবে। অর্থাৎ হার মানাবে সময়কে এবং যন্ত্রণাকে।  সেই হয়ে উঠবে চ্যাম্পিয়ন, যে সবার আগে সবচেয়ে কম সময়ে পৌঁছবে তার গন্তব্যে। তাই কোনিকেও চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম এবং তার সঙ্গে সময়কে হার মানানো।তাই ক্ষিতীশ কোনির প্রশিক্ষণে এতোটুকু খামতি রাখেন নি। কখনো ভয় দেখিয়ে কখনো বা খাবার লোভ দেখিয়ে তিনি কোনিকে দিয়ে সাধ্যাতীত পরিশ্রম করিয়েছিলেন। তারই ফল কোনি পেয়েছিল মাদ্রাজে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে। এইজন্য ক্ষিতীশ বলেছিলেন, “যন্ত্রণাটাই তাে আমি”।



FILE DETAILS..
 File name: madhyamik koni 
 Type: PDF
 Size: 398.2 kb
 page: 8
 location: google drive
                                               
   Click here : DOWNLOAD

 



আরো পড়ো.....




Post a Comment

4 Comments

  1. অনেক সাহায্য হলো।....ধন্যবাদ।॥

    ReplyDelete
  2. ধন্যবাদ😊😊😊😊😊😊😊

    ReplyDelete
  3. দশটি প্রশ্নই খুব ভালো করে সাজিয়ে দিয়েছেন । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। 🙏🙏

    ReplyDelete