●● কর্ম কারক ●●
সংজ্ঞা-কর্তা যাকে উদ্দেশ্য করে বা আশ্রয় করে তার ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কর্ম কারক বলে। এককথায় ক্রিয়ার আধারকে কর্ম কারক বলে।
উদাহরণ-রথীন মাছ ধরল ।- ধরা ক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে "মাছকে "কেন্দ্র করে, তাই এখানে "মাছ "-কর্ম কারক।
●● শ্রেণীবিভাগ ●●
প্রকার-কর্ম কারক বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন-(১)মুখ্য কর্ম (২)গৌণ কর্ম (৩)উদ্দেশ্য কর্ম (৪)বিধেয় কর্ম(৫)সমধাতুজ কর্ম (৬)কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্ম প্রভৃতি।
●● মুখ্য কর্ম ●●
সংজ্ঞা-কোনো বাক্যের দুটি কর্মের মধ্যে যেটির সঙ্গে কর্তার মুখ্য সম্পর্ক থাকে, তাকে মুখ্য কর্ম বলে।অথবা কর্তা সম্পাদিত কর্মটি অপ্রাণীবাচক হলে তাকে মুখ্য কর্ম বলে। এক্ষেত্রে ক্রিয়াকে "কী" দ্বারা প্রশ্ন করলে যে কর্ম পাওয়া যায় তাকেই মুখ্য কর্ম ধরা হয়।
উদাহরণ-নেহা ব্যাকরণ পড়বে। এখানে 'ব্যাকরণ' অপ্রাণীবাচক বা কর্তা 'নেহা'র সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। তাই 'ব্যাকরণ 'মুখ্য কর্ম।
●● গৌণ কর্ম ●●
সংজ্ঞা-কোনো বাক্যের দুটি কর্মের মধ্যে যেটির সঙ্গে কর্তার গৌণ সম্পর্ক থাকে তাকে গৌণ কর্ম বলে। অথবা কর্তা সম্পাদিত কর্মটি যদি প্রাণীবাচক হয় তবে তাকে গৌণ কর্ম বলে। এক্ষেত্রে ক্রিয়াকে "কাকে দ্বারা প্রশ্ন করলে যে কর্ম পাওয়া যায় তাকেই মুখ্য কর্ম ধরা হয়।
উদাহরণ- মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছে। এখানে "শিশু " প্রাণীবাচক হওয়ায় গৌণ কর্ম হয়েছে।
●●উদ্দেশ্য কর্ম ●●
সংজ্ঞা- কখনো কখনো সকর্মক ক্রিয়ার দুটি কর্ম থাকে। এই দুটি কর্মের মধ্যে একটি উদ্দেশ্য করে আর একটি কর্ম ব্যবহৃত হয়। যাকে উদ্দেশ্য করে আর একটি কর্ম ব্যবহৃত হয়, তাকে উদ্দেশ্য কর্ম বলে।
উদাহরণ-তুমি গুরুজনকে ভক্তি করবে। -এখানে "গুরুজনকে" উদ্দেশ্য করে ভক্তি কর্মটি বসেছে। তাই "গুরুজন" হল উদ্দেশ্য কর্ম।
●● বিধেয় কর্ম ●●
সংজ্ঞা- দ্বিকর্মক বাক্যে উদ্দেশ্য কর্মকে আশ্রয় করে যে কর্মটি বসে তাকে বিধেয় কর্ম বলে। এক্ষেত্রে বিধেয় কর্ম "শূণ্য "বিভক্তি যুক্ত হয়।
উদাহরণ-তুমি তো তিলকে তাল বানানোর ওস্তাদ। এই বাক্যে "তাল" হল বিধেয় কর্ম।
●●সমধাতুজ কর্ম ●●
সংজ্ঞা-ক্রিয়াটি যে ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হয়েছে কর্মটিও যদি সেই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হয় তবে সেই কর্মকে সমধাতুজ কর্ম বলে।
উদাহরণ-পূজা দারুণ গান গাইছে। কর্ম 'গান'এবং ক্রিয়া 'গাইছে ' একই ধাতু থেকে উৎপন্ন হয়েছে। তাই 'গান ' হল সমধাতুজ কর্ম।
●●কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্ম ●●
সংজ্ঞা-যে কর্মকর্তৃবাচ্যে কর্তা অনুপস্থিত থাকে, এমনকি কর্মই কর্তার মতো আচরণ করে,তাকে কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্ম বলে।
উদাহরণ-শাঁখ বাজে। বাঁশি বাজে- উদাহরণ দুটিতে 'শাঁখ ' ও 'বাঁশি '- নিজে থেকে বাজতে পারে না, কেউ বাজালেই বাজে। তাই এখানে তারা "কর্মকর্তৃবাচ্যের কর্ম।"
●● উহ্য কর্ম ●●
সংজ্ঞা-সকর্মক ক্রিয়ার কর্ম উহ্য থাকলে তাকে উহ্য কর্ম বলে।
উদাহরণ-সীমা সুন্দর গাইছে। - "গান" কর্মটি উহ্য আছে।
●●কর্মের বীপ্সা ●●
সংজ্ঞা-কোনো বাক্যে একই কর্ম পরপর দুইবার ব্যবহৃত হলে তাকে কর্মের বীপ্সা বলে।
উদাহরণ-কেমন কেমন বলা হল?এখানে "কেমন কেমন "পাশাপাশি দুইবার বসেছে, তাই এটি কর্মের বীপ্সা।
●● বাক্যাংশ কর্ম ●●
সংজ্ঞা-সমাপিকা ক্রিয়াহীন পদসমষ্টি বা বাক্যাংশ অখন্ডভাব প্রকাশে কর্মরূপে ব্যবহৃত হলে তাকে বাক্যাংশ কর্ম বলে।
উদাহরণ-দিনরাত তোমার এই চিৎকার চেঁচামেচির অভ্যাস ত্যাগ করো। রেখাঙ্কিত পদসমষ্টি হল বাক্যাংশ কর্ম।
●● অক্ষুণ্ণ কর্ম ●●
সংজ্ঞা-বাচ্যরূপ পরিবর্তন করা হলেও যদি কর্মের কোনো পরিবর্তন না হয় তবে তাকে অক্ষুণ্ণ কর্ম বলে।
উদাহরণ-কর্তৃবাচ্য - দেবর্ষি লেখাটা পড়ল।
কর্মবাচ্য- দেবর্ষির লেখাটা পড়া হল। এখানে কর্তৃবাচ্যের কর্ম " লেখাটা "- কর্মবাচ্যেও অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
Tips:- (১) জল ছাড়া মাছ যেমন বাঁচতে পাড়ে না ,তেমনি ব্যাকরণ ছাড়া বাংলায় ভালো রেজাল্ট করা যায় না।
(২)বাংলায় ১০০% নম্বর তোলার জন্য মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রমের ব্যকরণ খুঁটিয়ে পড়তেই হবে।
(৩) ব্যকরণ সম্পর্কে উপযুক্ত ধারণা প্রদানের চেষ্টাই আমরা করছি। তোমরা সাফল্যমণ্ডিত হলে আমাদের পরিশ্রম অবশ্যই সার্থক হবে।
আরো পড়ো- [ করণ কারকের বিস্তারিত আলোচনা ]
2 Comments
Outstanding Post..... Carry on.
ReplyDeleteThax
ReplyDelete