উচ্চমাধ্যমিকের রাষ্ট্রবিজ্ঞান, প্রশ্ন ও উত্তরসহ দ্বিতীয় অধ্যায়


দ্বিতীয় অধ্যায়:-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পর্বে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। 

সংক্ষিপ্ত বিষয়বস্তু:-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে পুঁজিবাদী আদর্শ ও উদারনৈতিক গণতন্ত্রের ভাবনা নিয়ে একদিকে পশ্চিমে জোটের নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গড়ে ওঠে অপরদিকে সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদী আদর্শকে নিয়ে পূর্ব জোটের নেতৃত্বে সোভিয়েত ইউনিয়নের আবির্ভাব ঘটে। এই কারণে দুটি জোটের মধ্যে বল প্রয়োগ ছাড়াই উত্তেজনাকর একটি পরিবেশের সৃষ্টি হয়,যা ঠান্ডা যুদ্ধ বা স্নায়ু যুদ্ধ বা Cold war নামে ইতিহাসে পরিচিত।

ঠান্ডা লড়াই এর পর্যায়:-     

 প্রথম:-1945 থেকে 1950 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে প্রথম পর্যায়ে ধরা হয়। 

দ্বিতীয়:-1950 থেকে 1953 খ্রিস্টাব্দকে দ্বিতীয় পর্যায়ে ধরা হয়। 

তৃতীয় :-1953 থেকে  1959 খ্রিস্টাব্দের সময়কে তৃতীয় পর্যায় ধরা হয়।

চতুর্থ:-1959 থেকে 1962 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ঠান্ডা লড়াই এর চতুর্থ পর্যায় ।

মেরু :-আন্তর্জাতিক রাজনীতি যখন কোন বৃহৎ শক্তি বা একাধিক শক্তি গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়,তখন সেই বৃহৎ শক্তিকে বা শক্তি গোষ্ঠীগুলোকে মেরু বলে অভিহিত করা হয়। 


দ্বিমেরুকরণ :-দ্বিমেরুকরণ কথার অর্থ হল- দুই মেরুতে বিভক্ত হয়ে পড়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়া 2 মহাশক্তিধর অস্ত্রধারীরা তাদের ইচ্ছামত বিশ্বকে চালনা করতে চেয়েছিল।কিন্তু বর্তমানে দ্বিমেরুকরণ তত্ত্বটি পরবর্তীকালে দুর্বল হয়ে পড়েছিল কারন পৃথিবীতে বর্তমানে দুটি  মেরুর পরিবর্তে তিনটি মেরু তৈরি হয়েছে। 


জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন:-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত রাষ্ট্রগুলি 2 মহাশক্তিধর দেশের সঙ্গে যুক্ত না হয় তারা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকার নীতি গ্রহণ করে। এর প্রধান রূপকার ছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এছাড়াও যুগোস্লাভিয়ার রাষ্ট্রপতি টিটো ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি সুকর্ণ মিশরের রাষ্ট্রপতি নাসের এবং ঘানার প্রধানমন্ত্রী নক্রুমা ।

        *জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের শীর্ষ সম্মেলন *


প্রথম শীর্ষ সম্মেলন:-যুগোস্লাভিয়ার বেলগ্রেড সম্মেলন 1961 খ্রিস্টাব্দের পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে 6 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে, এতে 26 টি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল ।এই সম্মেলনের প্রধান সভাপতি ছিলেন জোসেফ টিটো। 

সংগঠন                                           সম্পূর্ণ নাম

COMINFORM- Communist Information Bureau.

NATO-    North Atlantic Treaty Organization.

SEATO-  South-East Asia Treaty Organization

CENTO-  Central Treaty Organization. 

■সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর-                                     মান-1

1.ঠান্ডা যুদ্ধের সূচনা কবে হয়? 

উ-1945 সালে। 

2-ঠান্ডা লড়াই বলতে কী বোঝায়?

উ-যুদ্ধ ও শান্তির মাঝামাঝি যুদ্ধ যুদ্ধ অবস্থাকে। 

3-ঠান্ডা যুদ্ধের প্রধান দুই প্রতিপক্ষ কারা?

উ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়া।  

4-ঠান্ডা লড়াই শব্দটি প্রথম কে প্রয়োগ করেন?

উ-বার্নার্ড বারুচ। 

5-ঠান্ডা যুদ্ধ কে গরম যুদ্ধ না বলে "যুদ্ধের একটি নতুন কৌশল"- কে বলেছেন?

উ-ফ্রিডম্যান। 

6-ঠান্ডা যুদ্ধকে গরম শান্তি বলে চিহ্নিত করেছেন?

উ-বার্নেট ।

7-ফালটন বক্তৃতায় কে সভাপতিত্ব করেন?

উ-চার্চিল ।

8-মিউনিখ চুক্তি কবে স্বাক্ষরিত হয়?

উ-1938 সালে।

9-মার্শাল পরিকল্পনা কবে কার্যকর হয় ?

উ- 1947 সালে।

10-ট্রুম্যান নীতি কবে গৃহীত হয় ?

উ- 1947 সালের 12 ই মার্চ। 

11-NATOগঠিত হয় কবে? 

উ-1949 সালের 4 এপ্রিল। 

12-ন্যাটো গঠিত হয় কার উদ্যোগে? 

উ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 

13-ওয়ারশ চুক্তি কবে স্বাক্ষরিত হয়?

উ- 1955 সালের 14 ই মে। 

14-ওয়ারশ চুক্তি গঠিত  হয় কার উদ্যোগে?

উ-সোভিয়েত ইউনিয়ন। 

15-সুয়েজ সংকট কবে দেখা দেয়?

উ- 1956 সালে।

16-দাঁতাত কি ?

উ-একটি প্রক্রিয়া। 

17-দাঁতাত শব্দটির অর্থ কি? 

উ-পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাসপূর্ণ সম্পর্ককে সহজ করে তোলা। 

18-চীন ভারত সীমান্ত সংঘর্ষ প্রথম কবে হয়? 

উ-1962 সালে। 

19-ঠান্ডা লড়াইয়ের অবসান কবে হয়? 

উ-1991 সালে।

20-প্রথম পরমাণু বোমা আক্রান্ত দেশটির নাম কি ?

উ-জাপান। 

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন- উত্তর -                        মান-1

1-ঠান্ডা যুদ্ধ বলতে কী বোঝো?

উ-সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত না হয়ে ওঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে যে পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস,সন্দেহ, রেষারেষি, দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি হয় তা ঠাণ্ডা লড়াই নামে পরিচিত।


2-ঠান্ডা লড়াই কথাটি কে কবে প্রথম ব্যবহার করেন ?

উ-আমেরিকার ধনী ব্যবসায়ী বার্নার্ড বারুচ  1947 সালের 16 এপ্রিল ঠান্ডা লড়াই কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন। 

3-মনরো নীতি কী?

উ-1831 খ্রিস্টাব্দে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জেমস মনরো ঘোষণা করেন যে আমেরিকা আমেরিকাবাসীর জন্য আমেরিকায় কোন ইউরোপীয় ব্যবস্থা কায়েম হলে আমেরিকা তা মেনে নেবে না। এই ঘোষণায় মনরো নীতি নামে পরিচিত। 

4-মিউনিখ চুক্তি কবে কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?

উ-মিউনিখ চুক্তি 1938 খ্রিস্টাব্দে ঊনত্রিশে সেপ্টেম্বর গ্রেট ব্রিটেন,জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালির মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ।

5-ট্রুম্যান নীতি কি? 

উ-1947 খ্রিস্টাব্দের 12 ই মার্চ মার্কিন রাষ্ট্রপতি হ্যারি ট্রুম্যান মার্কিন কংগ্রেসে এক ভাষণে গ্রিস, তুরস্ক সহ বিশ্বের যে কোন দেশকে সোভিয়েত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সামরিক ও আর্থিক সাহায্যের যে প্রতিশ্রুতি দেন , তা ট্রুম্যান নীতি নামে পরিচিত।

6.মার্শাল পরিকল্পনা কি ?

উ-1947 সালের 5 জুন হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভাষণে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ মার্শাল যুদ্ধবিধ্বস্ত সমগ্র ইউরোপে আর্থিক পুনরুজ্জীবনের যে প্রতিশ্রুতি দেন, তা পরিকল্পনা নামে পরিচিত। 

7-proxy war কী?

উ-সরাসরি পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা না করে আড়াল থেকে যুদ্ধকে পরিচালনা করে যাওয়া কে proxy war বলে।

8-দাঁতাত নীতির প্রবক্তা কে? 

উ-দাঁতাত নীতির প্রবক্তা হলেন হেনরি কিসিংগার।

9-দাঁতাত বলতে কী বোঝো?

উ-দাঁতাত একটি ফরাসি শব্দ যার অর্থ হলো -দুই বা তার অধিক শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলির মধ্যে উত্তেজনা হ্রাস ঘটানো এবং বোঝাপড়ার মাধ্যমে একটি সহজ সম্পর্ক স্থাপনের অবস্থা। 

10-কমিকন কি? 

উ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত বিভিন্ন জোটের ন্যাটো, সিয়াটো , আনজাস প্রভৃতির বিরুদ্ধে রাশিয়া 1949 খ্রিস্টাব্দে যে সংস্থা গঠন করে তা কমিকন নামে পরিচিত। 

11-একমেরু বিশ্ব বলতে কী বোঝো?

উ-একমেরু বিশ্ব বলতে আন্তর্জাতিক শক্তিসাম্যের এমন একটি অবস্থাকে বোঝায় যেখানে কেবলমাত্র একটি ক্ষমতা কেন্দ্রে থাকে। 

12-পঞ্চশীল নীতি কে প্রথম ঘোষণা করেছিলেন?

উ-ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু প্রথম পঞ্চশীল নীতি ঘোষণা করেন । 1954 সালে তিব্বতকে কেন্দ্র করে ভারত ও চীনের মধ্যে এই নীতি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। 

Tips-●পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী প্রশ্ন উওর তৈরি করা হয়েছে। 

●এই অধ্যায় থেকে 3 টি MCQ ও 3 টি SAQ আসে। তাই এই কটা পড়লেই হবে। 


Post a Comment

0 Comments