করণ কারকের সংজ্ঞা,বিভক্তির চিহ্ন, অনুসর্গ ও উদাহরণসহ শ্রেণীবিভাগ আলোচনা।

করণ কারকের সংজ্ঞা,বিভক্তির চিহ্ন, অনুসর্গ ও উদাহরণসহ শ্রেণীবিভাগ আলোচনা। 


                         ■ করণ শব্দের অর্থ ■

করণ শব্দের অর্থ হলো যন্ত্র,উপায় বা সহায়ক।অর্থাৎ ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র ।


                       ■ করণ কারকের সংজ্ঞা ■

কর্ত যার সাহায্যে ক্রিয়া সম্পাদন করে ,তাকে করণ কারক বলে। অন্যভাবে বলা যেতে পারে যে , ক্রিয়া সাধনের যন্ত্র বা উপায়কেই করণ কারক বলে।


                          ■ উদাহরণসহ ব্যাখ্যা ■

(১)-ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা ।

(২)-অরুণ আলোয় শুকতারা গেল মিলিয়ে। উদাহরণ দুটি লক্ষ্য কর-কি দিয়ে তৈরি? -স্বপ্ন দিয়ে। কিসের দ্বারা মিলিয়ে গেল?-আলোয় ।এখানে স্বপ্ন ও আলোর  দ্বারা  ক্রিয়া সম্পাদিত হয়েছে।তাই এরা করণ কারক ।


                  ■ করণ কারকে বিভক্তি চিহ্ন ■

এ (স্থানবিশেষে 'য়' 'য়ে'),তে,এতে, র, এর প্রভৃতি বিভক্তি বসে। যেমন স্বর্ণসীতা সোনায় গড়া না অশ্রুতে? এখানে করণ কারকে 'য়' ও  'তে' বিভক্তি বসেছে। 

                   ■ করণ কারকের অনুসর্গ ■

করণ কারকে দ্বারা,দিয়ে ,করে, কর্তৃক , হতে প্রভৃতি অনুসর্গ বসে। 

                ■ করণ কারকের শ্রেণীবিভাগ ■

করণকারক বিভিন্ন প্রকার হয়। যথা -

(১) সাধন বা যন্ত্রাত্মক করণ,(২) সমধাতুজ করণ (৩) লক্ষণাত্মক করণ(৪)হেতুময় করণ(৫)উপায়াত্মক করণ(৬)কালাত্মক করণ  প্রভৃতি। 


              ■ সাধন বা যন্ত্রাত্মক করণ কারক ■

ক্রিয়া সাধনের উপায়টি যদি ইন্দ্রিয়গোচর বস্তু হয়, তবে তাকে বলা হয় সাধন বা যন্ত্রাত্মক করণ কারক। । 

যেমন -কাঠুরে কুঠারে কাটে। ২-কোদালে মাটি কাটে। এখানে ক্রিয়া সাধনের উপায় কুঠার ও কোদাল  ইন্দ্রিয় গোচর বস্তু। তাই তাদের সাধন করণ বলা হয়। 


                       ■ সমধাতুজ করণ কারক ■

কোন ক্রিয়া বা ক্রিয়াজাত বিশেষণ যে ধাতু হতে উৎপন্ন করণ কারকটিও যদি সে ধাতু নিষ্পন্ন হয়, তবে সে করণকে বলা হয় সমধাতুজ করণ ।

যেমন (১)-যে বাঁধনে মোরে বাধিঁছে। এখানে বাঁধন ও বাধিঁছে একই ধাতু থেকে উৎপন্ন হয়েছে ,তাই এটিকে সমধাতুজ করণ বলে।

 

                     ■ লক্ষণাত্মক করণ কারক ■

 লক্ষণ বা চিহ্ন বোঝাতে যে করণ কারক হয়, তাকে লক্ষঋণাত্মক করণ কারক বলে ।যেমন - 

(১) গোফে বিড়াল চেনা যায়। (2) পৈতায় বামন চেনা যায়। 


                        ■ হেতুময় করণ কারক ■

হেতু বোঝাতে করণ কারকের প্রয়োগ হলে, তাকে হেতুময় করণ কারক  বলে। যেমন -অধিক আনন্দে চোখে জল আসে।


                     ■ উপায়াত্মক করণ কারক ■

ক্রিয়া সাধনের উপায়টি যদি ইন্দ্রিয়গোচর বস্তু না হয়, তবে তাকে বলা হয় উপায়াত্ম করণ।

যেমন-(১) ছলে-বলে-কৌশলে কার্যসিদ্ধি হয়। ( 2)হিংসায় নয়  প্রেমে জয় করো।-এখানে ক্রিয়া সাধনের উপায় 'ছল- বল' ও 'প্রেম' ইন্দ্রিয়গোচর বস্তু নয় তাই এদের উপায়াত্মক করণ বলে ।

                     ■ কালাত্মক করণ কারক ■

কোনো কাল বা সময়ের দ্বারা যদি ক্রিয়াটি সম্পাদিত হয়, তবে তাকে কালাত্মক করণ কারক  বলে ।

যেমন -তিন দিনে ঝগড়া মিটে গেল। -এখানে তিনদিন ক্রিয়া সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে ,তাই তিন দিন হল কালাত্মক করণ কারক ।

                            ■ করণের বীপ্সা ■

ক্রিয়া সাধনের উপায়টি যদি পাশাপাশি দুইবার ব্যবহৃত হয় ,তবে তাকে করণের বীপ্সা বলে। যেমন -রোগে রোগে দেহটা জীর্ণ হয়ে গেল। (২)জলে জলে পচে গেল দেশটা।


 

[ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল ক্লাস চলতে থাকবে]

Post a Comment

1 Comments