নব্য প্রস্তর যুগের মানুষের জীবযাত্রার পরিচয় |
পড়া শোনাHello, আমার প্রিয় ছাত্র ছাত্রী তোমরা ইতিমধ্যে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছো। তোমাদের অনেকেরই ধারণা নেই কোন প্রশ্নটি পরীক্ষায় আসবে? কোন প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ? তাই তোমাদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন নব্য প্রস্তর যুগের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি কী ছিল?অথবা নব্য প্রস্তর যুগের মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। এই যুগের গুরুত্ব কী?উত্তর তুলে ধরলাম।
•এবছর একাদশ শ্রেণীর প্রশ্নপত্র নিজ নিজ বিদ্যালয় তৈরি করবে। ফলে বাড়তি একটা চাপ শিক্ষার্থীদের রয়েছে। তাই আমাদের দেওয়া প্রশ্ন-উত্তরগুলি অনুশীলন করলে তোমরা অবশ্যই পরীক্ষায় কমন পাবে। তোমাদের সাফল্যই আমাদের পরিশ্রমকে সার্থক করবে।
বিষয় | ইতিহাস |
শ্রেণী | XI |
অধ্যায় | দ্বিতীয় |
বোর্ড | WBCHSE |
প্রশ্ন | রচনাধর্মী |
একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস||দ্বিতীয় অধ্যায়||বড় প্রশ্নোত্তর
1.নব্য প্রস্তর যুগের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি কী ছিল?
অথবা
নব্য প্রস্তর যুগের মানুষের জীবনযাত্রা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। এই যুগের গুরুত্ব কী?
উত্তর
ভূমিকা:- আনুমানিক ৫০০০ - ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পৃথিবীতে নব্য প্রস্তর যুগের সূচনা হয়েছিল। প্রাগৈতিহাসিক সংস্কৃতির শেষ পর্যায়কে বলা হয় নব্য প্রস্তর যুগ। এই যুগের মানুষের জীবনযাত্রার মান ছিল অন্যান্য যুগের তুলনায় অনেক উন্নত।
নব্য প্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্য:- নব্য প্রস্তর যুগের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো-
হাতিয়ার ও যন্ত্রপাতি:- নব প্রস্তর যুগের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল তীক্ষ্ণ যন্ত্রপাতি। এই যুগের মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে তারা মসৃণ ও সূচালো পাথরের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে শুরু করে ।যেমন কাস্তে, কুলো, হামানদিস্তা, জাতা, হাতুড়ি ,বাটালি প্রভৃতি। এই যুগের মানুষ তীর ধনুক আবিষ্কার করে।
কৃষিকাজ:- নব্য প্রস্তর যুগের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, কৃষির আবিষ্কার। এই যুগে মানুষ যাযাবর বৃদ্ধির অবসান ঘটিয়ে স্থায়ীভাবে কৃষিকাজ করা শুরু করে। কৃষিজাত পণ্য মজুত রাখার জন্য তারা মাটির পাত্র নির্মাণ করা শুরু করে। এই যুগের উল্লেখযোগ্য কৃষিজ ফসল ছিল যব, গম, ভুট্টা, খেঁজুর প্রভৃতি।
পশুপালন:- নব্য প্রস্তর যুগের মানুষ কৃষির প্রয়োজনে পশুকে পালন করতে শুরু করে। তারা সর্বপ্রথম কুকুরকে পোষ মানিয়েছিল। তারপর গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদিকে। পরিবহনের কাজেও পশুকে তারা ব্যবহার করত।
সমাজজীবন:- নব্য প্রস্তর যুগে মানুষ সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে পশু পালন করত ও জীবন কাটাতো। নারী ও পুরুষেরা নিজেদের মধ্যে শ্রম ভাগ করে নেয়। পুরুষেরা যন্ত্রপাতি তৈরি, পশুপালন ও ঘরবাড়ি বানাত। কিন্তু নারীরা গৃহস্থালির কাজ করত।
শিল্পকলা:- নব্য প্রস্তর যুগের মানুষ প্রতীকী চিহ্নযুক্ত ছবি আঁকত। যা আগেকার যুগের চিত্রাংকন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। নব্য প্রস্তর যুগে প্রাপ্ত মৃৎপাত্রের নকশা দেখে অলংকরণ শিল্পের পরিচয় পাওয়া যায়।
চাকার ব্যবহার ও অন্যান্য অগ্রগতি:-কৃষির আবিষ্কারের ফলে নব্য প্রস্তর যুগে মানুষ পর্যাপ্ত খাদ্যের সংস্থান করতে সক্ষম হলে তাদের খাদ্যের জন্য আর বিশেষ চিন্তা করতে হত না এর ফলে অবসরকালে মানুষ নিজেদের চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন দিকের অগ্রগতির সুযোগ পায়। এই সময় মানুষ আগুনের নানাবিধ ব্যবহার চাকার আবিষ্কার মৃৎশিল্প যানবাহন তৈরি নৌকায় পাল ঘটানো গৃহ নির্মাণ প্রভৃতি করতে শেখে।
অস্তিত্বের নিদর্শন:- নব্য প্রস্তর যুগের নিদর্শন পাওয়া যায় ইরাকের জারমো ও হাসুনা, জর্ডনের জেরিকো, দক্ষিণ মেসোপটেমিয়া, আনাতোলিয়া মালভূমি, সুইজারল্যান্ড বর্তমান পাকিস্তানের অন্তর্গত বালুচিস্থান, বিহার, উড়িষ্যা ও দাক্ষিণাত্যের বিভিন্ন স্থানে ।
নব্য প্রস্তর যুগের গুরুত্ব:- প্রাচীন যুগের ইতিহাসে নব প্রস্তর যুগের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যেমন-
1. এই যুগের হাতিয়ার গুলির অভাবনীয় উন্নতি সম্ভব হয় হাতিয়ার গুলির কার্যকারিতা ও বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
2. এ যুগের মানুষ পশুকে পোষ মানতে আরো দক্ষ হয় এবং তাদের সঠিকভাবে কাজে লাগাতে শেখে।
3. কৃষি ও পৌষ পালন এর মাধ্যমে নব্য প্রস্তর যুগে যে স্বচ্ছলতা আসে তার ফলে নতুন নতুন আবিষ্কার সম্ভব হয়। যেমন- গৃহ নির্মাণ, চাকা তৈরি, নৌকা তৈরি, লাঙ্গল তৈরি প্রভৃতি।
4. সামাজিক সংগঠন হিসেবে এই সময় পরিবারের উদ্ভব ঘটে।এই সমাজে পেশা ভিত্তিক বিভিন্ন শ্রেণীর উদ্ভব ঘটে।
1 Comments
Anish kar
ReplyDelete