ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের উন্নতির কারণ || মাধ্যমিক আঞ্চলিক ভূগোল

 ভারতের শিল্পঃ- মাধ্যমিক আঞ্চলিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায়ের অষ্টম পরিচ্ছেদ ভারতের শিল্প থেকে সম্ভাব্য দুটি রচনাধর্মী প্রশ্ন দেওয়া হল। আজকে দেওয়া হল- কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণ, ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের উন্নতির কারণ, ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের সমস্যা, ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, কার্পাস বয়ন শিল্প গড়ে ওঠার কারণ, পশ্চিম ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্প গড়ে ওঠার কারণ, পূর্ব -মধ্য ভারতের লৌহ ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণ, ভারতের লৌহ ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণ, পশ্চিমবঙ্গের লৌহ ইস্পাত শিল্পের উন্নতির কারণ, দশম শ্রেণির ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর প্রভৃতি তুলে ধরা হলো।


মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ দুটি রচনাধর্মী প্রশ্ন আলোচনা করা হলো। এই অধ্যায় থেকে mcq & saq , ব্যাখ্যা মূলক প্রশ্ন, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তর পাওয়ার জন্য আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হতে পারো। এছাড়াও কোনো প্রশ্ন থাকলেও তোমরা কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারো।




পশ্চিম ভারতে কার্পাস বয়ন শিল্পের অধিক উন্নতির কারণগুলি আলোচনা করো 


বিষয় মাধ্যমিক ভূগোল 
প্রশ্নের ধরণরচণাধর্মী 
প্রশ্ন সংখ্যা ২ টি
১ নং প্রশ্ন পশ্চিম ভারতের কার্পাস বয়ন শিল্পের উন্নতির
কারণ আলোচনা করো।
২ নং প্রশ্ন পূর্ব-মধ্য ভারতের লৌহ ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের
 কারণগুলি লেখো। 


কার্পাস বয়ন শিল্পের উন্নতির কারণঃ- পশ্চিম ভারতে মহারাষ্ট্রের মুম্বাই ,পুনে, নাগপুর অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি কার্পাস বয়ন শিল্প কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এছাড়াও ভূপাল, ইন্দোরেও এই শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। এর প্রধান প্রধান কারণ গুলি হল-


কাঁচামালের সহজলভ্যতাঃ- মহারাষ্ট্র , গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশের কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে কার্পাস চাষ হয়। ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত এই কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চল উৎকৃষ্ট কার্পাস উত্তোলক হওয়ায় কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের ঘটেছে।


আদ্র জলবায়ুঃ- আরব সাগরের আদ্র সমুদ্র বায়ুর প্রভাব থাকায় পশ্চিম ভারতের গুজরাট ও মহারাষ্ট্র অঞ্চলে ও মহারাষ্ট্র অঞ্চলে অধিক সংখ্যায় কার্পাস বয়ন শিল্প কেন্দ্র গড়ে উঠেছে কারণ আর্দ্র আবহাওয়ায় সুতো সহজে ছেড়ে যায় না।


বিদ্যুতের প্রাচুর্যঃ- পশ্চিম ভারতের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ভিরা কয়না,খোপালী উকাই প্রভৃতি এবং তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ট্রম্বে, নাসিক, আমেদাবাদ,ধুবরান প্রভৃতি এবং কাঁকড়াপাড়া, তারাপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অবস্থিত হওয়ায় অধিক কার্পাস বয়ন শিল্প গড়ে উঠেছে।


উন্নত পরিবহন ব্যবস্থাঃ- পশ্চিম ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে জাতীয় সড়ক 3, 4, 6 ও 8 এর দ্বারা এবং কঙ্কন রেলপথের সম্প্রসারণ পশ্চিম রেলপথের অবস্থা প্রভৃতির কারণে পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। তাই কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবন ঘটেছে।


বন্দরের অবস্থানঃ-  পশ্চিম ভারতের পশ্চিম উপকূলে মুম্বাই, কান্ডালা, সুরাট পোরবন্দর, জওহরলাল নেহেরু বন্দর, ওখা প্রভৃতি বন্দরের মাধ্যমে কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি আমদানি ও বস্ত্র রপ্তানির সুবিধা থাকায় কার্পাস বয়ন শিল্পের বিকাশ ঘটেছে।


অন্যান্য কারণঃ - এছাড়াও পশ্চিম ভারতে কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের অন্যান্য কারণ হলো- গুজরাটি, ভাটিয়া, LIC, IDBI সংস্থার অর্থ বিনিয়োগ, সুলভ দক্ষ ও  অদক্ষ শ্রমিকের প্রাচুর্য, বাজারের চাহিদা প্রভৃতির কারণে কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবন ঘটেছে। 


পূর্ব ও মধ্য ভারতে লৌহ ইস্পাত শিল্পের উন্নতির কারণ গুলি লেখো- 


পূর্ব ও মধ্য ভারতের লৌহ ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনঃ- ভারতের অধিকাংশ লৌহ ইস্পাত শিল্প পূর্ব ও মধ্য ভারতে গড়ে উঠেছে। যেমন- পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর, বার্নপুর, ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর ও বোকারো, ওড়িশার রাউলকেল্লা, ছত্রিশগড়ের ভিলাই পূর্ব-মধ্য ভারতের লৌহ ইস্পাত শিল্প।এই শিল্পের কেন্দ্রীভবনের প্রধান প্রধান কারণ গুলি হল-


আকরিক লোহার সহজলভ্যতাঃ- লৌহ ইস্পাত শিল্পের প্রধান কাঁচামাল আকরিক লোহা।যা ঝাড়খণ্ডের গুয়া ,নয়ামুন্ডি , বুঁদা ওড়িশার গরুমাহিসানি, দাল্লি, বায়লাডিলা প্রভৃতি লৌহ খনি থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়।


কয়লার প্রাচুর্যঃ- আকরিক লোহাকে গলানোর জন্য প্রচুর তাপশক্তির প্রয়োজন হয় ।এর উৎস হল কয়লা, যেহেতু পূর্ব ভারতের ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া, বোকারো, গিরিডি, বিহারের ডালটনগঞ্জ , রামগড় ও পশ্চিমবঙ্গের রানীগঞ্জ প্রভৃতি কয়লা খনি অঞ্চল থেকে সহজেই কয়লা পাওয়া যায় । তাই পূর্ব মধ্য ভারতের লৌহ ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের ঘটেছে।


বিদ্যুতের প্রাচুর্যঃ- পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর, ফারাক্কা, ব্যান্ডেল, কোলাঘাট, ঝাড়খন্ড বোকারো পাত্রাতু এবং উড়িষ্যার তালচের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রভৃতি এবং পশ্চিমবঙ্গের ম্যাসাঞ্জোর, ঝাড়খণ্ডের পাঞ্চেত, মাইথন ওড়িশার হিরাকুদ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শিল্পের প্রয়োজনীয় প্রয়োজ বিদ্যুৎ শক্তি পাওয়া যায়।


উন্নত পরিবহন ব্যবস্থাঃ- পূর্ব-মধ্য ভারতের NH- 2, 3 প্রভৃতি জাতীয় সড়ক পথের মাধ্যমে গড়ে ওঠা উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা, পূর্ব ও দক্ষিণ রেলপথ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটায় লৌহ ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের ঘটেছে।


জলের যোগানঃ- লৌহ ইস্পাত শিল্পে প্রচুর জলের প্রয়োজন হয়। পূর্ব ভারতের দামোদর, খরকাই , ব্রাহ্মণী শিল্পের প্রয়োজনীয় জল সহজেই পাওয়া যায়।


অন্যান্য কারণঃ- এছাড়াও পূর্ব ও মধ্য ভারতের কলকাতা হলদিয়া বন্দরের সাহায্যে কাঁচামাল ও উৎপন্ন দ্রব্য কলকাতা শিল্পাঞ্চল, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল, রাচি শিল্পাঞ্চলে ও ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের বিকাশ। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে মূলধন বিনিয়োগ প্রভৃতির কারণে লৌহ ইস্পাত শিল্পের উন্নতি ঘটেছে ঠিক আছে ভালো করে পড়বে।



আরো পড়ো:- 

ভারতের জলবায়ু MCQ & SAQ


ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ 

Post a Comment

0 Comments