ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজী সুভাচন্দ্র বসুর অবদান সংক্ষেপে পর্যালোচনা করো।

 ড়াশোনাঃ- দ্বাদশ শ্রেণী ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায়-"" থেকে আলোচনা করা হলো- গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন-ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজি সুভাচন্দ্র বসুর অবদান সংক্ষেপে পর্যালোচনা কর। প্রশ্নটি দ্বাদশ শ্রেণির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এছাড়াও বি এড বা গ্রেজুয়েট ছেলেমেয়েদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।


■ এই অধ্যায় থেকে রচনাধর্মী প্রশ্ন পরীক্ষায় অবশ্যই আসবে । তাই এই অধ্যায়ের প্রত্যেকটি সম্ভাব্য রচনাধর্মী প্রশ্ন আমরা আপলোড করে চলেছি। তোমরা উত্তরের PDF ডাউনলোড করে রাখতে পারবে । তোমরা যদি পরীক্ষায় সাফল্য পাও, তবেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে ।


 প্রশ্ন:- ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজী 

সুভাচন্দ্র বসুর অবদান সংক্ষেপে পর্যালোচনা করো।

 



                                   উত্তর



ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজি:- ঐতিহাসিক রমেশ চন্দ্র মজুমদার মনে করেন যে নানান ব্যর্থতা থাকা সত্ত্বেও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু ও তার আজাদ হিন্দ ফৌজের গুরুত্ব ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয়। সুভাষ চন্দ্রের নেতৃত্বে আজাদী সেনারা ভারতকে স্বাধীন করার জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন, তার ফলেই আমরা স্বাধীনতা লাভ করতে পেরেছি। নেতাজী ঘোষণা করেছিলেন-"পৃথিবীতে এমন কোনো শক্তি নেই , যা ভারতকে পরাধীন করে রাখতে পারে। ভারতে স্বাধীনতা আসবে এবং তা হবে অনতিকালের মধ্যে।"



সুভাষচন্দ্র বসুর কৃতিত্ব:- ভারতকে স্বাধীনতা দেওয়ার প্রসঙ্গে নেতাজীর ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয় ইতিহাসে। তার উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বগুলি হলো :- 



রাজনৈতিক জীবন:- নেতাজী ICS পরীক্ষায় চতুর্থ হলেও ব্রিটিশ সরকারের চাকরি গ্রহণ করেননি। বরং তিনি চিত্তরঞ্জন দাস ও গান্ধীজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন।



সুভাষের পদত্যাগ:- ত্রিপুরা ও হরিপুরা অধিবেশনে নেতাজি সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু ত্রিপুরা কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনের সময় গান্ধীজীর সঙ্গে মতবিরোধ ঘটলে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। কারণ গান্ধীজী সীতারামাইয়াকে সভাপতি পদে বসাতে চেয়েছিলেন।



ফরওয়ার্ড ব্লক দল গঠন:- নেতাজি কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে 1939 সালের 23 শে মে ফরওয়ার্ড ব্লক নামে একটি নতুন দল গঠন করেন। মূলত জমিদারী প্রথা ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের  অবসান ঘটানোই ছিল এই দলের প্রধান লক্ষ্য।



নেতাজীর ভারত ত্যাগ:- ব্রিটিশ সরকার নেতাজিকে গ্রেপ্তার করে বিচারে কারাদণ্ড দেন। কিন্তু সুভাষচন্দ্র জেলে অনশন শুরু করলে ব্রিটিশ সরকার তাকে কলকাতায় গৃহবন্দী করে রাখে। কিন্তু 1941 সালের 17ই জানুয়ারি পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে তিনি দেশ ত্যাগ করেন।



জার্মানি ও জাপানে গমন:- ছদ্মবেশ ধারণ করে নেতাজি কাবুল থেকে মস্কোতে এবং সেখান থেকে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে পৌঁছান। সেখানে হিটলারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জাপানের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখানে রাজ বিহারী বসু ও ক্যাপ্টেন মোহন সিং এর নেতৃত্বে গঠিত আজাদ হিন্দ ফৌজের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।



আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠা:- প্রায় ৫০,০০০ আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেনাকে পাঁচটি ব্রিগেডে বিভক্ত করেন। ১৯৪৩ সালের ২৪ শে অক্টোবর নেতাজী সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠা করে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান সেনাপতি হন। জাপান এই সরকারকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ দান করেন।



আজাদ হিন্দ ফৌজের অভিযান:- 1944 সালে নেতাজীর আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারতের উদ্দেশ্যে অভিযান করে। প্রথমে আরাকান দখল করে বহ্মদেশে পৌঁছায় এবং সেখান থেকে ভারতের মাটিতে পৌঁছে নেতাজী ঘোষণা করেন- " তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব। " এরপর মনিপুরের মহিমা দখল করে ইম্ফল দখল করতে যান। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান পরাজিত হলে আজাদ হিন্দ বাহিনী ব্রিটিশদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।


মন্তব্য:- একথা সত্য যে, নেতাজী ও তার বাহিনী ভারতকে সরাসরি স্বাধীনতা প্রদান করতে পারেনি। কিন্তু তাদের খাঁটি দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের পথকে অনেকটা প্রশস্থ করেছিল এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।


Download pdf 


Post a Comment

0 Comments