শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য কে কবে আবিষ্কার করেন? || কাব্যটির সংক্ষিপ পরিচয় দাও


শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য  :-একাদশ শ্রেণীর বাংলা শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ থেকে mcq ও রচনাধর্মী প্রশ্ন আসে, এছাড়াও স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষাতেও মধ্যযুগের ইতিহাস থেকে নানান প্রশ্ন। এ ছাড়াও অনেকে খুঁজে চলেছো-শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের জন্ম খন্ড, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য প্রশ্ন উত্তর, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য কে রচনা করেন, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য pdf download , শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য কে কোথা থেকে আবিষ্কার করেন? শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য প্রশ্নোত্তর প্রভৃতি। সেই কথা মাথায় রেখেই আমরা আজকে এই কনটেন্ট আপলোড করলাম । 


■ বাংলা শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ মধ্যযুগের বাংলা সমাজ ও সাহিত্যের প্রধান ধারা থেকে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন উত্তর, অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর ও রচনাধর্মী প্রশ্ন আসে। তাই অধ্যায়টি ভালোভাবে পড়ার পর আমাদের দেওয়া  ওয়েবসাইট থেকে প্রশ্ন ও উত্তর পড়বে। এতে অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালো হবে। আমাদের পোস্টটি ভাল লাগলে অবশ্যই তোমরা বন্ধুদের শেয়ার করবে।


 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্য কে, কবে আবিষ্কার করেন ? কাব্যটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। 


Ans : শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের আবিষ্কার ও প্রকাশকাল : গবেষক বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ মহাশয় ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বাঁকুড়া জেলার বনবিষ্ণুপুরের নিকটবর্তী কাঁকিল্ল্যা গ্রামের শ্রী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে অযত্নে রাখা তুলোট কাগজে লেখা একটি বাংলা পুথির সন্ধান পান। পুথিটির রাধাকৃষ্ণের প্রণয়লীলা বিষয়ক। বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় 'বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ' থেকে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থটি মুদ্রিত আকারে প্রকাশ পায়। 


কাব্যের রচনাকাল : গ্রন্থটির রচনাকাল সম্বন্ধে যথেষ্ট মতপার্থক্য রয়েছে। বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে ১৩৮৫ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে এটি রচিত। ড. নলিনীকান্ত ভট্টশালীর মতে,১৪৫০ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোনো একসময়ে রচিত। ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় গবেষণা করে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের ভাষাকে আদি মধ্যযুগের আদর্শরূপে গ্রহণ করেছেন। 


কাব্যের ভাষা : কাব্যবাণী নির্ভর করে ভাষার উপরে। 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্যের ভাষা সহজ-সরল ও আন্তরিক। এই ভাষা হল মধ্যযুগের বাংলা ভাষার আদিপর্বের একমাত্র সাহিত্য নিদর্শন। 


কাব্যের রচনারীতি : লৌকিক জীবনের আখ্যান অবলম্বনে রচিত 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'কাব্যের আঙ্গিক অভিনব।  যেমন - 
     ১. এ কাব্যের মধ্যে পাঁচালির আঙ্গিক স্পষ্ট। 
     ২. ঝুমুর গানের সঙ্গে কাব্যের সাদৃশ্য থাকায় একে লৌকিক নাট্যগীতিও বলা যায়। 
     ৩. আংশিক পদে কৃষ্ণ-রাধা-বড়ায়ির সংলাপ , ঘটনা ও চরিত্রগত দ্বন্দ এ কাব্যের মধ্যে নাটকীয়তাকে প্রমান করেছে। 
     ৪. ড.সুকুমার সেন এই কাব্য গঠনে দেখেছেন যাত্রাগানের আঙ্গিক। 


কাহিনীর  উৎস :বড়ু চন্ডীদাস 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন'কাব্যের উপকরণ সংগ্রহ করেছিলেন জয়দেবের গীতগোবিন্দ , ভাগবতপুরান এবং লোকমুখে প্রচলিত নানা গল্পে থেকে। 


কাব্যের বিষয়বস্তু :  শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে মোট তেরোটি খণ্ড বা অধ্যায় আছে - ১. জন্ম খণ্ড , ২.তাম্বুল খণ্ড , ৩. দান খণ্ড , ৪. ভার খণ্ড , ৫.নৌকাখণ্ড , ৬.ছত্র খণ্ড , ৭.বৃন্দাবন খণ্ড , ৮.কালীয়দমন খণ্ড , ৯.যমুনা খণ্ড , ১০.হারখণ্ড , ১১.বাণ খণ্ড ,১২.বংশী খণ্ড ,১৩.রাধাবিরহ।  শেষ খণ্ডটির নামের শেষে 'খণ্ড' কথাটি কেনো নেই তা জানা যায় নি। 
           কংসের অত্যাচার থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য বিষ্ণু কৃষ্ণরূপে আসেন এবং বিষ্ণুর সঙ্গে লক্ষ্মীদেবী আসেন রাধারূপে।  মর্ত্যে জন্মে রাধা ভুলে গেলেন তার পূর্ব পরিচয়। কৃষ্ণ বড়ায়ির মুখে রাধারূপের সৌন্দর্য বর্ণনায় মুগ্ধ হন। আইহন ঘোষের পত্নী রাধা বড়ায়ির তত্ত্বাবধানে হাটে দহি - দুগ্ধ - নবনী বিক্রয়ের অভিপ্রায়ে মথুরায় গমন করেন। কৃষ্ণ বড়ায়ির সঙ্গে পরামর্শ করে রাধার সঙ্গে মিলিত হতে চান।  কৃষ্ণের এই অভিসন্ধি জানতে পেরে শ্রীরাধা বড়াই ও কৃষ্ণকে চূড়ান্ত অপমান করেন। ক্রোধান্বিতা বড়ায়ির প্রশ্রয়ে কৃষ্ণ রাধার সঙ্গে মিলিত হন।  অতঃপর কৃষ্ণের প্রতি রাধা ধীরে ধীরে অনুরাগিণী হন.নানা ঘাত -প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে রাধা কৃষ্ণের মিলন ও বিরহ বা বিচ্ছেদের মধ্যদিয়ে কাব্যটির পরিসমাপ্তি হয়।  



Post a Comment

0 Comments