অনুবর্তন কাকে বলে? প্রাচীন অনুবর্তন সংক্রান্ত প্যাভলভের পরীক্ষাটি বর্ণনা করো।

 পড়া শোনা:- উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিক্ষা বিজ্ঞান। দ্বিতীয় অধ্যায় শিখন কৌশল থেকে গুরুত্বপূর্ণ বড় প্রশ্ন অনুবর্তন কাকে বলে? প্রাচীন অনুবর্তন সংক্রান্ত প্যাভলভের পরীক্ষাটি বর্ণনা করো। আলোচনা করা হলো। পরীক্ষায় ভালো ফল করতে হলে অবশ্যই ছোট প্রশ্নের পাশাপাশি বড় প্রশ্ন-উত্তর আমাদের পড়তে হবে।

 এ বছর যারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে তাদের জন্য এই প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কয়েক বছর ধরে প্রশ্নটি পরীক্ষায় আসনি। তাই এবছর আসার সম্ভাবনা অনেক রয়েছে।



বিষয়শিক্ষাবিজ্ঞান 
প্রশ্নরচনাধর্মী 
মান
সম্ভাবনা৯৯%

প্রশ্ন:- অনুবর্তন কাকে বলে? প্রাচীন অনুবর্তন সংক্রান্ত প্যাভলভের পরীক্ষাটি বর্ণনা করো।


উত্তর


অনুবর্তন:- শিখন কৌশলে যে সকল প্রক্রিয়া রয়েছে,তার মধ্যে অন্যতম হল অনুবর্তন। প্রাণীদের আচরণের প্রকৃতি অনুশীলন করাকে সাধারণত অনুবর্তন বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায় যে, যে প্রক্রিয়ায় মূল উদ্দীপকের সঙ্গে যুক্ত গৌণ উদ্দীপকগুলি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তাকে অনুবর্তন প্রক্রিয়া বলে। যেমন খাদ্য দেখলে কুকুরের লালাক্ষরণ হয়। এখানে খাদ্য হলো স্বাভাবিক উদ্দীপক এবং লালা ক্ষরণ হলো স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু প্যাভলভের পরীক্ষায় দেখা যায় স্বাভাবিক উদ্দীপক খাদ্যের সঙ্গে গৌণ উদ্দীপক ঘন্টাধনী উপস্থাপন করলে লালাক্ষরণ হয় ।পরবর্তীকালে ঘন্টা শুনেই কুকুরের লালাক্ষরণ হয়।


অনুবর্তন সংক্রান্ত প্যাভলভের পরীক্ষা:- রুশ মনোবিজ্ঞানী তিনি ছিলেন শরীর বিজ্ঞানের শিক্ষাবিদ। তিনি ১৯০৪ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। তার পরবর্তীত অনুবর্তন প্রক্রিয়াটি প্রাচীন অনুবর্তন নামে পরিচিত। আবার স্কিনারের অনুবর্তন তত্ত্বটি সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্ব নামে পরিচিত।


উপকরণ:- মনোবিজ্ঞানী প্যাভলপ তার অনুবর্তনমূলক কৌশলটি পরীক্ষা করার জন্য বিভিন্ন উপকরণের সাহায্য নিয়েছিলেন। যেমন (I)একটি ক্ষুধার্ত কুকুর, (ii) একটি ঘন্টা ধ্বনি (iii) একটি টেবিল (iv) কিছু খাদ্যবস্তু (v) অন্যান্য আনুষঙ্গিক উপকরণ।


পরীক্ষা:- প্যাভলভ তার পরীক্ষা শুরু করার পূর্বে ২০- ২৫ দিন ধরে কুকুরটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। ফলে কুকুরটি পরীক্ষাগারের পরিবেশ সম্পর্কে পরিচিত হয়। এরপর প্যাভলভ গবেষণাগারে কুকুরটির গলায়, বুকে ও কোমরে চামড়ার বেল্ট তিনি পড়িয়ে দিয়ে একটি ছোটো টেবিলের উপর দাঁড় করিয়ে দেন। যাতে সে নড়াচড়া করতে না পারে। কুকুরের গালে বিশেষ পদ্ধতিতে ছিদ্র করে রবার যুক্ত কাঁচের নল লালা গ্রন্থির সঙ্গে লাগিয়ে দেন।আবার লালা পরিমাপ করার জন্য কাচের পাত্রটির সঙ্গে কাইমোগ্রাম যন্ত্র যুক্ত করেন।


পর্যবেক্ষণ:- প্যাভলভ প্রথমে কিছু খাদ্যবস্তু ক্ষুদার্থ কুকুরের সামনে রাখলেন, দেখলেন যে কুকুরটির লালা ক্ষরণ হচ্ছে। এক্ষেত্রে খাদ্যবস্তু হলো স্বাভাবিক উদ্দীপক এবং লালাক্ষরণ হলো স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এরপর তিনি প্রতিদিন কুকুরটিকে খাদ্যবস্তু দেওয়ার পূর্বে কিছু সময় ধরে ঘন্টাধ্বনি বাজাতে শুরু করেন। ঘন্টা ধোনি বন্ধ হওয়ার পূর্বেই তিনি খাদ্যবস্ত কুকুরটিকে দিতেন।

                          প্রথমদিকে দেখা গেল ঘন্টা ধ্বনি শুনে কুকুর সজাগ হতো। তাই এখানে ঘন্টাধ্বনি স্বাভাবিক উদ্দীপক ও সজাগভাব স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। অবশেষে ঘন্টা ধ্বনির পুনরাবৃত্তি করার ফলে পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন যে খাদ্যবস্তু উপস্থাপন করার পূর্বেই কুকুরটির লালা ক্ষরণ হচ্ছে। এক্ষেত্রে কৃত্রিম উদ্দীপক ও স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপন হয়েছে।


সাংগঠনিক রুপ: 



সিদ্ধান্ত:- প্যাভলভ তার কুকুরের পরীক্ষা থেকে এই সিদ্ধান্তে আসেন যে স্বাভাবিক উদ্দীপক খাদ্যবস্তুর পরিবর্তে কৃত্রিম উদ্দীপক ঘন্টা ধ্বনির দ্বারা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া লালা ক্ষরণ হয়েছে। অর্থাৎ কৃত্রিম উদ্দীপকের দ্বারা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করাকে অনুবর্তন বলে। প্যাভলভের পরীক্ষায় ঘন্টা ধ্বনি অনুবর্তিত উদ্দীপক এবং লালক্ষরণ অনুবর্তিত প্রতিক্রিয়া।



Post a Comment

0 Comments