রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও বিষয়বস্তুর পরিধি সম্পর্কে আলোচনা করো।

 পড়াশোনা:একাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞানপ্রথম অধ্যায়ঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান সংজ্ঞা বিবর্তন ও বিষয়বস্তু থেকে গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাব্য রচনাধর্মী প্রশ্ন- রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও বিষয়বস্তুর পরিধি সম্পর্কে আলোচনা করো দেওয়া হলো। এই অধ্যায়ঃ থেকে চারটি MCQ ও চারটি SAQ অথবা  একটি রচনাধর্মী প্রশ্ন থাকবে, মোট 8 নম্বর। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রশ্ন উত্তর pdf ফাইল আকারে তোমাদের দেওয়া হলো। যা তোমাদের প্রস্তুতি  নিতে অনেক সহায়তা করবে।

■ এছাড়াও 2023 সালের ফাইনাল পরীক্ষার জন্য প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা এ বছর একাদশ শ্রেণীতে উঠেছো তারা অবশ্যই এই প্রশ্ন-উত্তরের পিডিএফ ডাউনলোড করে প্রস্তুতি নেবে।।


বিষয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান 
অধ্যায়ঃ প্রথমঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞানঃ সংজ্ঞা,
বিবর্তন ও বিষয়বস্তু  
শ্রেণী একাদশ 
রচনাধর্মীএকটি
মান 8


রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনাক্ষেত্রের পরিধি বিশ্লেষণ করো।

অথবা 

রাষ্ট্র বিজ্ঞানের প্রকৃতি ও বিষয়বস্তুর পরিধি সম্পর্কে আলোচনা করো।

                            উত্তর 

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও বিষয়বস্তুর পরিধিঃ- যুগ ও সময়ের সাথে সাথে সামঞ্জস্য রেখে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ক্রমশবর্ধমান।তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার পরিধিতে নতুন নতুন বিষয় স্থান পেয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার ক্ষেত্রটিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যেতে পারে। যেমনঃ -



রাষ্ট্র ,সরকার ,আইন এবং  বিচারব্যবস্তা :- দার্শনিক অ্যারিস্টটলের মতে, প্রতিটি মানুষই ভালোভাবে বাঁচতে চায়। মানুষের এই বাঁচার উদ্দেশ্য পূরণের জন্যই গড়ে ওঠে রাষ্ট্র। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় হলো রাষ্ট্র। আবার রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য পূরণ হয় সরকারের মাধ্যমে। রাষ্ট্রের এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয় আবার আইনের দ্বারা। তাই রাষ্ট্র, সরকার, আইন ও বিচারব্যবস্থা হলো রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার বিষয়বস্তু।



রাজনৈতিক মতবাদঃ- রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার অন্যতম বিষয় হলো রাজনৈতিক চিন্তা এবং মতবাদ। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভিন্ন চিন্তাবিদ ,যেমন- প্লেটো, অ্যারিস্টটল, ম্যাকিয়াভেলি, হবস্ , লক, রুশো, জন স্টুয়ার্ট মিল, কার্ল মার্কস ও অন্যান্য দার্শনিক ও তাদের চিন্তাভাবনা নিয়ে আলোচনা করে।



আন্তঃবিষয় আলোচনাঃ- রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমাজবিজ্ঞানের একটি শাখা। তা সমাজবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা জানি, আন্তঃবিষয় আলোচনা একে অপরকে সমৃদ্ধ করে। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় আন্তঃবিষয় সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে।



প্রতিনিধিত্ব, রাজনৈতিক দল ও জনমতঃ- জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিবর্তে পরোক্ষ বা প্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্রের প্রবর্তন ঘটেছে পরোক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে দল ব্যবস্থা অতভাবে জড়িত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনমতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে কারণ ক্ষমতায় কোন দল আশ্বিনভাবে তার জনমতি নির্ধারণ করে কাজেই প্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থা রাজনৈতিক দল এবং জনমত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার পরিধিতে স্থান করে নিয়েছে।



আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও প্রতিষ্ঠানঃ-  বর্তমানে কোন দেশই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। প্রত্যেকটি রাষ্ট্রকে নিজস্ব প্রয়োজনে কোনো না কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়। যা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নামে পরিচিত। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আইন ও প্রতিষ্ঠানও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।



মুল্যমানঃ- রবসন, গ্রিভস প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা মনে করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান কেবলমাত্র সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করে না । রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনা কি হওয়া উচিত সে বিষয়েও আলোচনা করে। এ কারণেই বলা যায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনা মূল্যমান নিরপেক্ষ নয়।



তুলনামূলক রাজনীতিঃ- রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা জনকল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলেছেন। এ কাজে তাদেরকে অতীত, বর্তমান এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করতে হয়। সুতরাং তুলনামূলক রাজনীতির আলোচনাও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় স্থান করে নিয়েছে।




আচরণবাদীদের অভিমতঃ- বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে গ্রাহাম  ওয়াল্স, আর্থার ব্যান্টসলে, চার্লস মেরিয়াম, এইচ লাসওয়েল প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ব্যাক্তি ও গোষ্ঠীর আচরণের উপর গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার ক্ষেত্রে আধুনিকতা নিয়ে আসেন। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও সংখ্যায়নের প্রয়োগ ঘটিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনাকে এরা মূল্যবান নিরপেক্ষ করে গড়ে তুলতে সচেষ হন। এদের চিন্তা ধারাই আচরণবাদ নামে পরিচিত।




মার্কসবাদীদের অভিমতঃ- মার্কসবাদীদের মত অনুযায়ী সমাজের চরিত্র নির্ধারিত হয় উৎপাদন ব্যবস্থার দ্বারা। শ্রেণী বিভক্ত সমাজ ব্যবস্থায় মালিক শ্রেণী, শোষণ ও শাসনকে অব্যাহত রাখার জন্য রাষ্ট্রক্ষমতা নিজেদের অনুকূলে রাখার চেষ্টা করে। অন্যদিকে শ্রমিক শ্রেণী শোষণ থেকে মুক্তির জন্য বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ফলের শ্রেণী সংগ্রাম, বিপ্লব, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি বিষয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে।



বিশ্বায়নঃ- বর্তমানে বিশ্বায়নের প্রভাবকে কোন রাষ্ট্রই অস্বীকার করতে পারে না বিশ্বায়নের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বে বাণিজ্যের সম্প্রসারণের চেষ্টা চলছে কাজেই বিশ্বায়ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় স্থান করে নিয়েছে।



মন্তব্যঃ- পরিশেষে বলা যায় যে, সময়ের সাথে সাথে বহু নতুন নতুন বিষয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার পরিধি দিন দিন বেড়েই চলেছে।  রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনা কোনো নির্দিষ্ট সূচির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। পরিবর্তনশীল সমাজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার পরিধিও পরিবর্তীত হয়।

সম্পূর্ণ উত্তরটির pdf পেতে ক্লিক করুন DOWNLOAD এ 👇👇👇👇








Post a Comment

0 Comments