ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো এবং এই আন্দোলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো

 ড়াশোনাঃ- দ্বাদশ শ্রেণী ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায়-"" থেকে আলোচনা করা হলো- গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন-ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো এবং এই আন্দোলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।প্রশ্নটি দ্বাদশ শ্রেণির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এছাড়াও বি এড বা গ্রেজুয়েট ছেলেমেয়েদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।


■ এই অধ্যায় থেকে রচনাধর্মী প্রশ্ন পরীক্ষায় অবশ্যই আসবে । তাই এই অধ্যায়ের প্রত্যেকটি সম্ভাব্য রচনাধর্মী প্রশ্ন আমরা আপলোড করে চলেছি। তোমরা উত্তরের PDF ডাউনলোড করে রাখতে পারবে । তোমরা যদি পরীক্ষায় সাফল্য পাও, তবেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে ।


 প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক

 তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো এবং 

এই আন্দোলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ

 সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।

 



ভূমিকা:- ১৯৪২ সালের আগস্ট আন্দোলনে সাধারণ মানুষ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। উচ্চবর্ণ থেকে নিম্নবর্ণ প্রায় সকল শ্রেণীর মানুষ নিঃস্বার্থভাবে ভারতের স্বাধীনতা আদায়ের জন্য আন্দোলনে যোগদান করে। গান্ধীজীর নেতৃত্বে এই আন্দোলন শুরু হলেও পরবর্তীতে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নেতা-নেত্রী নেতৃত্ব দেন। তাই ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এই আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম।



ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য গুলি হল-



জাতীয় কংগ্রেসের মর্যাদার পুনঃপ্রতিষ্ঠা:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় গান্ধিজি অনশন শুরু করলে জাতীয় কংগ্রেসের প্রতি জনগণের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। কংগ্রেস নেতাদের আত্মত্যাগের ঘটনায় সমগ্র জাতি আপ্লুত হয়ে ওঠে।



গণবিদ্রোহের চরিত্র:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনে বিভিন্ন শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, নারী প্রমুখেরা ব্যাপক ও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। তাই ভারতছাড়ো আন্দোলন গণবিপ্লবে পরিণত হয়।



সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রচেষ্টা:- মুসলিম লীগ ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও হিন্দু মুসলিম ঐক্য গড়ে ওঠে। যেমন ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, চট্টগ্রাম, শিলচর প্রভৃতি স্থানের বহুমুসলিম এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।



স্বাধীনতার ভিত্তি প্রস্তুত :- ড: আম্বা প্রসাদ বলেছেন যে, ১৯৪২ এর বিদ্রোহ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতের স্বাধীনতার ভিত্তি প্রস্তুত করেছিল। এই আন্দোলন থেকেই আপামর ভারতবাসী তাদের বহু প্রতীক্ষিত স্বাধীনতার স্বাদ পেতে শুরু করেছিল।



অন্যান্য গুরুত্ব:- এছাড়াও এই আন্দোলনের ফলে জাতীয় ঐক্যবোধ গড়ে ওঠে, ব্রিটিশদের শুভবুদ্ধির জাগরণ ঘটে, ভারতীয়রা স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে, দেশের যুবসমাজ আন্দোলনের যোগদান করে প্রভৃতি।



ভারত ছাড়ো আন্দোলনে মহিলাদের অংশগ্রহণ:- ১৯২০ সাল থেকে নারী জাতিকে স্বাধীনতা স্পৃহায় অনুপ্রাণিত করেছিলেন গান্ধীজি। যেমন সরোজিনী নাইডু , অরুনা আসফ আলি, সুচেতা কৃপালিনী প্রমুখেরা স্বাধীনতার কাজে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেন।



সরোজিনী নাইডু:- গান্ধীবাদী নেত্রী হিসেবে লবণ সত্যাগ্রহ ও আইন অমান্য আন্দোলনে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। গান্ধীজ, জহরলাল নেহেরু প্রমুখেরা গ্রেপ্তার হলে সরোজিনী নাইডু আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।



অরুনা আসফ আলি:- আসফ আলীকে বিবাহ করে অরুনা কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী হিসেবে লবণ সত্যাগ্রহে অংশগ্রহণ করেন এবং কারাবাসে যান। কিন্তু জেল থেকে মুক্তি পেয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান। আবার ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রস্তাব গৃহীত হলে কংগ্রেসের সমস্ত নেতৃত্ব গ্রেপ্তার হন। তখন অরুনা আসফ আলী প্রতিবাদ করে গোয়ালিয়া ট্যাঙ্ক ময়দানে কংগ্রেসের পতাকা উত্তোলন করেন।



সুচেতা কৃপালিনী:- অরুনা আসফ আলীর অন্যতম সমসাময়িক কংগ্রেস নেত্রী ছিলেন সুচেতা কৃপালিনী। তিনি গান্ধীজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অহিংস নীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক আন্দোলন পরিচালনায় বিশ্বাসী ছিলেন।



অন্যান্য নেত্রী:- এছাড়াও ঊষা মেহতা, আসামের ১৩ বছরের কিশোরী কনক লতা বড়ুয়া, মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রমুখেরা বীরাঙ্গনার মতো আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এদের মধ্যে মাতঙ্গিনী হাজরা ছিলেন প্রথম মহিলা শহীদ, যিনি ভারত ছাড়ো আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাই ভারত ছাড়ো আন্দোলনে নারীদের ঐতিহাসিক মূল্য বহু গুণ।


READ MORE ....

প্রথম অধ্যায় অতীত স্মরণ MCQ & SAQ 


উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস ফাইনাল সাজেশন2022


তৃতীয় অধ্যায়ঃ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া MCQ & SAQ 


ফ্রী অনলাইন মোক টেস্ট  ইতিহাস 




Post a Comment

0 Comments