চর্যাপদ কে কোথা থেকে আবিষ্কার করেন? সন্ধ্যা ভাষা বলতে কী বোঝো? চর্যাপদের সাহিত্য মূল্য আলোচনা করো।

 ড়াশোনাঃ- একাদশ শ্রেণির বাংলা শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অংশের তৃতীয় অধ্যায় চর্যাপদ থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন 1. চর্যাপদ কে কোথা থেকে আবিষ্কার করেন? সন্ধ্যা ভাষা বলতে কী বোঝো? চর্যাপদের সাহিত্য মূল্য আলোচনা করো। এবং 2. চর্যাপদের কবি কে ? চর্যাপদের গুরুত্ব বাংলা সাহিত্যে কতটা? - প্রশ্ন দুটি একাদশ শ্রেণির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও বি এড বা গ্রেজুয়েট ছেলে-মেয়েদের জন্যও প্রশ্ন দুটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।


■ এই অধ্যায় থেকে রচনাধর্মী প্রশ্ন পরীক্ষায় অবশ্যই আসবে । তাই এই অধ্যায়ের প্রত্যেকটি সম্ভাব্য রচনাধর্মী প্রশ্ন আমরা আপলোড করে চলেছি। তোমরা উত্তরের PDF ডাউনলোড করে রাখতে পারবে । তোমরা যদি পরীক্ষায় সাফল্য পাও, তবেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে ।


 প্রশ্নচর্যাপদ কে কোথা থেকে আবিষ্কার করেন? 

 সন্ধ্যা ভাষা বলতে কী বোঝো?

 চর্যাপদের সাহিত্য মূল্য আলোচনা করো ? 1+2+2= 5 



                           উত্তর 


চর্যাপদের আবিষ্কারক:- ১৯০৭ সালে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজ দরবারের গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদের প্রতিটি আবিষ্কার করেন।


সন্ধ্যা ভাষা:- চর্যাপদে বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যরা তাদের সহজিয়া ধর্মের সাধন তত্ত্ব প্রকাশ করেছেন। তাই সেগুলি রহস্যময়, গুপ্ত ও সাংকেতিক ভাষায় রচিত। এই ভাষাকে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় সন্ধ্যা ভাষা বলে উল্লেখ করেছেন। সন্ধ্যাভাষা সন্ধিক্ষণের ভাষা। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে এই ভাষা 'আলো আঁধারির ভাষা', কিছুটা আলোকিত, কিছুটা অন্ধকার, অর্থাৎ খানিক বোঝা যায়, খানিক বোঝা যায় না। তাই ডাক্তার প্রবোধ চন্দ্র বাগচী এবং বিধুশেখর শাস্ত্রী মহাশয় এই ভাষাকে 'সন্ধ্যা ভাষা' বলেছেন।


চর্যাপদের সাহিত্যমূল্য:- বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন রূপে চর্যাপদের সাহিত্যমূল্য বা কাব্য মূল্য অপরিসীম। উল্লেখযোগ্য সাহিত্য মূল্য হলো - 


বাংলা ভাষার আদি রূপ:- মাগোধী অপভ্রংশের স্তর থেকে  জন্ম নেওয়া বাংলা ভাষার অপরিণত রূপটি প্রকাশিত হয়েছে চর্যাপদে। তাছাড়া সমগ্র নব্য ভারতীয় আর্য ভাষার নিদর্শন এর মধ্যে চর্যার ভাষা সবচেয়ে প্রাচীন। বাংলা ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য প্রথম পরিস্ফুতো হয়েছে চর্যাপদে, একথা সর্বজন স্বীকৃত।


সাধন তত্ত্ব:-  চর্যাপদে বৌদ্ধ ধর্মের কঠিন ও দুর্বোধ্য সাধন তত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছে। চর্যার গভীরতত্ত্ব বোঝা না গেলেও এর রচনা কৌশলটিকে বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না।


অলংকার:- চর্যাপদগুলোর মধ্যে উপমা ও রূপকের চমৎকার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। রূপক ও অলংকারের সাহায্যে চলমান জগত ও দুঃখময় মানব সংসারের নানান চিত্র তুলে ধরা হয়েছে চর্যাপদে।


ছন্দ:- চর্যার ছন্দ রূপে ধরা আছে পরিচিত পয়ার ও ত্রিপদীর খসড়া- অধিকাংশ পদে লক্ষ্য করা যায় মাত্রাবৃত্ত ছন্দ। রূপকথার আশ্রয়ে সাধনতত্ত্ব সাহিত্যশিল্পের মর্যাদা লাভ করেছে ।


উপসংহার:- পরিশেষে বলা যায় যে, বিশুদ্ধ সাহিত্য রচনার জন্য চর্যার কবিরা আসরে নামেননি। ফলে ধর্মীয় তত্ত্বকথা নৈর্ব্যক্তিক আকারে প্রকাশিত হয়েছে। রুপক রচনার সহজাত শক্তিতে কবিরা সাহিত্যরস সৃষ্টি করতে পেরেছেন।




2. চর্যাপদের কবি কে ? চর্যাপদের গুরুত্ব বাংলা সাহিত্যে কতটা ?                                                       1+4=5

আদি কবি:- বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন চর্যাপদের মোট পদকর্তা ২৪ জন। এদের মধ্যে আদি কবি হলেন লুই পাদ।

বাংলা সাহিত্যে চর্যাপদের গুরুত্ব:- বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন রূপে চর্যাপদের সাহিত্যমূল্য বা কাব্য মূল্য অপরিসীম। উল্লেখযোগ্য সাহিত্য মূল্য হলো - 


বাংলা ভাষার আদি রূপ:- মাগোধী অপভ্রংশের স্তর থেকে জন্ম নেওয়া বাংলা ভাষার অপরিণত রূপটি প্রকাশিত হয়েছে চর্যাপদে। তাছাড়া সমগ্র নব্য ভারতীয় আর্য ভাষার নিদর্শন এর মধ্যে চর্যার ভাষা সবচেয়ে প্রাচীন। বাংলা ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য প্রথম পরিস্ফুতো হয়েছে চর্যাপদে, একথা সর্বজন স্বীকৃত।


সাধন তত্ত্ব:- চর্যাপদে বৌদ্ধ ধর্মের কঠিন ও দুর্বোধ্য সাধন তত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছে। চর্যার গভীরতত্ত্ব বোঝা না গেলেও এর রচনা কৌশলটিকে বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না।


অলংকার:- চর্যাপদগুলোর মধ্যে উপমা ও রূপকের চমৎকার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। রূপক ও অলংকারের সাহায্যে চলমান জগত ও দুঃখময় মানব সংসারের নানান চিত্র তুলে ধরা হয়েছে চর্যাপদে।


ছন্দ:- চর্যার ছন্দ রূপে ধরা আছে পরিচিত পয়ার ও ত্রিপদীর খসড়া- অধিকাংশ পদে লক্ষ্য করা যায় মাত্রাবৃত্ত ছন্দ। রূপকথার আশ্রয়ে সাধনতত্ত্ব সাহিত্যশিল্পের মর্যাদা লাভ করেছে ।


উপসংহার:- পরিশেষে বলা যায় যে, বিশুদ্ধ সাহিত্য রচনার জন্য চর্যার কবিরা আসরে নামেননি। ফলে ধর্মীয় তত্ত্বকথা নৈর্ব্যক্তিক আকারে প্রকাশিত হয়েছে। রুপক রচনার সহজাত শক্তিতে কবিরা সাহিত্যরস সৃষ্টি করতে পেরেছেন।






Post a Comment

1 Comments