পড়াশোনা:-দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ষষ্ঠ অধ্যায়-'সরকারের বিভিন্ন বিভাগ সমূহ '- থেকে গুরুত্বপূর্ণ বাছাই করা প্রশ্ন "ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ কাকে বলে? ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতির পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি দাও। অথবা "পূর্ণ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ সম্ভবও নয়, সমীচীনও নয়"- মন্তব্যটির পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে আলোচনা করো, দেওয়া হলো। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে প্রশ্নটি সাজানো হয়েছে। তবে প্রতি বছরের জন্য এই প্রশ্ন উত্তরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
■ এবছরের পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবেই আজকে এই গুরুত্বপূর্ণ রচণাধর্মী প্রশ্নটি দেওয়া হলো। যেহেতু প্রশ্নের মান 8 তাই মাত্র 8টি পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নের উত্তরের PDF দেওয়া হলো। বার্ষিক পরীক্ষায় 99% সম্ভাবনা আসার।
বিষয় | রাষ্ট্রবিজ্ঞান |
অধ্যায় | ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ সরকারের বিভিন্ন বিভাগ । |
প্রশ্নের ধরণ | রচণাধর্মী । |
প্রশ্ন সংখ্যা | একটি। |
প্রশ্নের মান | ৮ |
প্রশ্ন:- ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি কাকে বলে? ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতির পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি দাও। অথবা "পূর্ণ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ সম্ভবও নয়, সমীচীনও নয়"- মন্তব্যটির পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে আলোচনা করো।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি:- ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির উল্লেখ্য সর্বপ্রথম করেছিলেন অ্যারিস্টটল। কিন্তু এই নীতির পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ করেন মন্তেস্কু। তার মতে যেকোনো স্বাধীন রাষ্ট্রে সরকারের তিনটি বিভাগ- যথা:- a.শাসন বিভাগ, b.আইন বিভাগ, c.বিচার বিভাগ- যে নীতির দ্বারা স্বাধীনভাবে নিজ নিজ কার্য সম্পাদন করে; তাকে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি বলা হয়। এ বিষয়ে মনটেস্কু রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সমালোচনা করে বলেছিলেন-"একই ব্যক্তি বা ব্যক্তি সংসদের হাতে সরকারের একাধিক বিভাগের কার্যাবলীর দায়িত্ব অর্পিত হলে ব্যক্তির স্বাধীনতা ধ্বংস হবে।"
পূর্ণ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ সম্ভব নয় বা বিপক্ষে যুক্তি:- যারা মনে করেন সরকারের ক্ষমতার পূর্ণ স্বতন্ত্রীকরণ সম্ভব নয় ও কাম্যও নয়, তাদের বিপক্ষের যুক্তিগুলি হল-
বাস্তব প্রয়োগ অসম্ভব:- সমালোচকদের মতে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির বাস্তব প্রয়োগ সম্ভব নয়। কারণ বর্তমানে একটি বিভাগ অন্য বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আবার পার্লামেন্ট বন্ধ থাকার সময় শাসন বিভাগের কাজ আইন বিভাগ করে।
বাস্তব প্রয়োগ কাম্য নয়:- সমালোচনার শেষে যদি ধরে নেওয়া যায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি বাস্তবে প্রয়োগ সম্ভব, তাহলেও এর প্রয়োগ কাম্য নয় বলে রাষ্ট্র বিজ্ঞানীরা মনে করেন । কারণ একটি বিভাগ আরেকটি বিভাগকে এই নীতির দ্বারা সহযোগিতা করবে না। ফলে একটি বিভাগের সঙ্গে অপর বিভাগের বিরোধ বাঁধবে।
দক্ষতা নষ্ট:-কল্যাণকর রাষ্ট্রে সরকারের একটি বিভাগ অপর বিভাগের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সেই আইন প্রণয়ন করে সুবিচার করে। কিন্তু এই আইন বা নীতি চালু হলে প্রতিটি বিভাগ তর্কে জড়িয়ে পড়বে এবং তাদের দক্ষতা নষ্ট হয়ে যাবে।
অন্যান্য যুক্তি:-এছাড়াও এই নীতির বিপক্ষে আরো অনেকগুলি যুক্তি দেখা যায়। যেমন- রাষ্ট্রের স্বাধীনতা বিনষ্ট হবে, সরকারি বিভাগের সহযোগিতা বজায় থাকবে না, বিভাগগুলির মধ্যে দায়িত্বজ্ঞানহীনতা দেখা দিবে প্রভৃতি।
পূর্ণ ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি সমীচীন নয় বা স্বপক্ষে যুক্তি:- যারা মনে করেন ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বা অগ্রাহ্য করার মতো নয়, তাদের যুক্তিগুলি হল-
বিভাগীয় স্বাধীনতা:-এই নীতি সরকারের প্রতিটি বিভাগকে স্বাধীনতা প্রদান করে। কারণ এই নীতির দ্বারা কোনো বিভাগ অপর কোনো বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা।
দায়িত্ব বৃদ্ধি:- এই নীতির দ্বারা প্রতিটি বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পায় বলে প্রতিটি বিভাগের দায়িত্ব বৃদ্ধি পায়। তাই প্রতিটি বিভাগ নিজেদের কাজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং নাগরিকদেরও দায়িত্ব নেয়।
ব্যক্তি স্বাধীনতা রক্ষা:- মন্টেস্কু মনে করেন, আইন প্রণয়ন, আইন তৈরি এবং প্রয়োগ একজন ব্যক্তির হাতে থাকলে ব্যক্তির স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হতে পারে। প্রতিটি বিভাগকে ভিন্ন ভিন্ন কাজের দায়িত্ব দিলে ব্যক্তির স্বাধীনতা বজায় থাকে।
অন্যান্য যুক্তি:- এছাড়াও অনেকে বলেছেন ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি চালু হলে সরকারি বিভাগের স্বৈরাচারীতা রদ কারা যায়, প্রতিটি বিভাগের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব, দেশের গতিশীলতা বজায় থাকে প্রভৃতি।
আরো পড়ো....
ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ সরকারের বিভিন্ন বিভাগ MCQ AND SAQ
সপ্তম অধ্যায়ঃ ভারতের শাসন বিভাগ MCQ AND SAQ
File name:- pol.science Type:- pdf Size:-22.6 kb Location:- Google drive Click here DOWNLOAD |
0 Comments