পড়াশোনা:-দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস, তৃতীয় অধ্যায় '' থেকে গুরুত্বপূর্ণ বাছাই করা প্রশ্ন "ক্যান্টন বাণিজ্য কাকে বলে। চীনের উপর আরোপিত বিভিন্ন অসম চুক্তিগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ননা দাও।"- দেওয়া হলো। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে প্রশ্নটি সাজানো হয়েছে। তবে প্রতি বছরের জন্য এই প্রশ্ন উত্তরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীরা খুজে চলেছে - ক্যান্টন বাণিজ্য কাকে বলে , ক্যান্টন বাণিজ্যের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কি কি,পিকিং এর সন্ধি 'চীনের চুক্তি ব্যবস্থা ,অসম চুক্তি কাকে বলে , অসম চুক্তি কি , প্রভৃতি।
■ নির্দিষ্ট সূচীতেই পরীক্ষা হবে আগেই জানিয়ে ছিলাম। দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে । তাই তোমাদের কথা ভেবেই আজকে এই গুরুত্বপূর্ণ রচণাধর্মী প্রশ্নটি দেওয়া হলো। যেহেতু প্রশ্নের মান 8 তাই মাত্র ছয়টি পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নের উত্তরের PDF দেওয়া হলো। বার্ষিক পরীক্ষায় 99% সম্ভাবনা আসার।
ক্যান্টন বাণিজ্য বলতে কী বোঝায়? চীনের ওপর আরোপিত বিভিন্ন অসম চুক্তি গুলি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
ক্যান্টন বাণিজ্যঃ- চীনের দক্ষিণ-পূর্বে ক্যান্টন বাণিজ্য ছিল এই ক্যান্টন বন্দর এর মাধ্যমে চীন অন্যান্য দেশের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখত । নিজ সভ্যতা ও সংস্কৃতি সম্বন্ধে উচ্চ ধারণার জন্য চীন বিদেশিদের দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দিতো না। কিন্তু চীনা আদালত 1759 সালে বিদেশীদের জন্য ক্যান্টন বন্দর খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় । ফলে ক্যান্টন বন্দরকে কেন্দ্র করে চিনে বিদেশিদের বন্দর কেন্দ্রিক যে বাণিজ্য প্রথার সূচনা হয় তা ক্যান্টন বাণিজ্য নামে পরিচিত।
ক্যান্টন বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্যঃ- ক্যান্টন বাণিজ্য প্রথার কতগুলি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন-
একতরফা বাণিজ্যঃ- এই প্রথা অনুযায়ী বিদেশীরা কেবলমাত্র চীনা দ্রব্য , যেমন- চা, চিনি, কাগজ, চীনা মাটির বাসনপত্র ও রেশম ক্রয় করতে পারতো। চীনে কোনো বিদেশি দ্রব্য তারা বিক্রি করতে পারত না।
চীনাদের উচ্চ ধারণাঃ- চীনারা নিজেদের স্বনির্ভরশীল ও উচ্চজাতি বলে মনে করতেন । তাই বিদেশীদের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য করার প্রয়োজন নেই। বিদেশীরা চীনের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করার অধিকার পেত না । তাই তারা বন্দরে গেটের সামনে তাঁবু খাটিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করতো।
চীনের ওপর আরোপিত অসম চুক্তিঃ- ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে চিং বংশের শাসনকালে বিভিন্ন ইউরোপীয় শক্তি, যেমন- ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , রাশিয়া, জাপান প্রভৃতি অসম একতরফা শোষণমূলক চুক্তি আরোপিত করেছিল যা অসম চুক্তি বা বৈষম্যমূলক চুক্তি নামে পরিচিত। এই অসম চুক্তিগুলি হলঃ-
নানকিং এর চুক্তিঃ- ব্রিটিশরা চীনে আফিম এর ব্যবসা শুরু করলে চীনারা ধীরে ধীরে আফিমের নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। চীনের সম্রাট মাঞ্চু চিন্তিত হয়ে এই ব্যবসা বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়। ফলে ইংরেজদের সঙ্গে চীন সরকারের যুদ্ধ বাধে 1840 সালে। চীন সম্রাট পরাজিত হলে 1842 সালে ব্রিটিশদের সঙ্গে নানকিং এর সন্ধি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়।
বোগের চুক্তিঃ- নানকিং এর চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কিছুকাল পরেই ইংরেজ ও চীনের মধ্যে 1843 সালে বোগের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । এই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী চীনের জনগণ ও শাসনব্যবস্থা ব্রিটিশ সরকারের হাতে চলে আসে।
ওয়াংশিয়া চুক্তিঃ- 1884 সালের 3 রা জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের ওয়াংসিয়া চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকাও ইংল্যান্ডের মতো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। বিভিন্ন শুল্ক চাপানোর পূর্বে আমেরিকার পরামর্শ নিতে হবে।
হোয়ামপোয়ার চুক্তিঃ- 1844 সালে ফ্রান্স চীনের সঙ্গে হোয়ামপোয়ার অসম চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তি অনুযায়ী ফ্রান্স চীনে অতিরিক্ত ক্ষমতা লাভ করবে। ফরাসি ব্যবসায়ীদের জন্য পাঁচটি বন্দর খুলে দিতে হবে।
সিমনোসেকির সন্ধি :- চিনের কোরিয়ার ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে চিন-জাপান যুদ্ধ (১৮৯৪-৯৫ খ্রি.) শুরু হয়। এই যুদ্ধে হেরে চিনের ওপর জাপান শিমােনােসেকির সন্ধি (১৮৯৫ খ্রি.) চাপিয়ে দেয়। এর ফলে কোরিয়াকে চিন স্বাধীনতা দেয় চিনের কাছ থেকে জাপান পেস্কাডােরেস, তাইওয়ান, লিয়াও টুং উপদ্বীপ ও পাের্ট আর্থার লাভ করে।জাপানকে চিন ২৩০ মিলিয়ন কিউপিং টেল ক্ষতিপূরণ দেয়। চিন তার বেশ কয়েকটি বন্দর জাপানের জন্য খুলে দেয়।
অন্যান্য চুক্তি :- এই চুক্তিগুলি ছাড়াও বিভিন্ন পাশ্চাত্য শক্তি চীনের উপর আরো কতকগুলি অসম চুক্তি চাপিয়ে দেয়।যেমনঃ - আইগুনের সন্ধি , তিয়েনসিয়েন চুক্তি ,পিকিং এর সন্ধি ,বক্সার প্রটোকল প্রভৃতি। এই সকল চুক্তির দ্বারা চীনের সম্পদ লুঠ করে বিদেশিরা এবং চীনা ভূখন্ডে বিদেশিদের আধিপত্য বাড়ে।
আরো পড়ো......
উচ্চমাধ্যমিক তৃতীয় অধ্যায়ঃ MCQ & SAQ
লোককথা কাকে বলে ?লোককথার বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব লেখো।
জাদুঘর কাকে বলে ? অতীত পূনর্গঠনে জাদুঘরের ভূমিকা লেখো।
প্রথম অধ্যায় অতীত স্মরণ MCQ & SAQ
উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস ফাইনাল সাজেশন2022
তৃতীয় অধ্যায়ঃ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া MCQ & SAQ
0 Comments